ময়মনসিংহে যারা বিড়াল লালন পালন করে তাদেরকে এক ছাতার নিচে আনার জন্য শতাধিক বিড়াল নিয়ে `ক্যাট শো` অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রফেসরস পেট কেয়ার নামে একটি সংগঠন নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের বৈশাখী মঞ্চে আয়োজন করেছে এই ক্যাট শো।
শনিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান শুরুর আগেই নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিড়াল নিয়ে হাজির হন বিড়াল প্রেমিরা। চোখে চশমা, শরীরে বর্ণিল পোশাক। কারও কপালে টিপ, মুখে মেকআপ করা। লালগালিচায় নানা ভঙিমায় ক্যাটওয়াক করছে বিড়াল। দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির, নানা নামের বিড়াল অংশ নেয় এই শোতে।
সুত্র জানায়, ২০২৩ সালে প্রথম বার একটি সংগঠন ক্যাট শো করেছিল একই স্থানে। দ্বিতীয় বারের মতো এবার আয়োজনটি করা হয়েছে। যেমন খুশি তেমন সাজ, প্রদর্শনী ও র্যাম্প শোতে অংশ নেয় ১৩০ টি বিড়াল। সেরাদের জন্য ছিলো পুরস্কারও। এতে অংশ নেওয়া বিড়াল প্রেমি ও দর্শনার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
[35340]
নগরের নতুন বাজার এলাকার গৃহিণী শাহানাজ মাইফুল নিজের ছেলে আফিদ আমিন চৌধুরীকে নিয়ে মেলায় আসেন। পার্সিয়ান জাতের দুটি বিড়াল ছিল মা-ছেলের হাতে। বিড়ালের শরীরে বর্ণিল পোশাক, চোখে চশমা। একটির নাম মুলু ও অন্যটির প্রিটি।
তিনি বলেন, আমাদের বাসায় বিড়ালগুলো আমাদের ভাইবোনের মতো। বাবা-মা আমাদের যেমন কেয়ার করে, তাদেরও এমন কেয়ার করে। পড়াশোনার ফাঁকে সময় কাটাই বিড়ালের সঙ্গে। মুঠোফোনে গেম খেলার চেয়ে বিড়ালের সঙ্গে খেলা করা অনেক ভালো। কারণ, বিড়াল খুবই বিশ্বস্ত, ওরা মানুষের মতো বেইমানি করবে না। মুরগির মাংস, মাছ ও ক্যাট ফুড খেতে দেওয়া হয়। আমাদের কথা শুনলে গিফটও দেওয়া হয়।
শাহানাজ মাইফুল বলেন, বিড়ালকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসি। নাম ধরে ডাকলেই সাড়া দেয়। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিড়ালের জন্মদিন উদ্যাপন করি। জন্মদিন উপলক্ষে আলাদা করে মাছ বা মুরগি কাটা হয়। বিড়াল বাসায় থাকলে সুন্দর সময় কাটে, ডিপ্রেশন লাগে না। বিড়ালকে রোগমুক্ত রাখতে নিয়মিত চেকআপ করা হয়।’
[35334]
শিক্ষক মাহমুদা হোসেন মেয়ে মাধুর্য মাহজাবিনকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের দুটি শখের বিড়াল নিয়ে এসেছেন। একটির নাম ব্রাউনি, অপরটির সিম্বি। দুটিই পার্সিয়ান প্রজাতির। মাহমুদা হোসেন বলেন, আমার দুটি বিড়ালের একটি নারী ও একটি পুরুষ। বিড়ালগুলোর যখন দুই মাস বয়স, তখন থেকে লালন-পালন করছি। সংসার ও চাকরির পাশাপাশি বিড়ালের সঙ্গে আমার খুব ভালো সময় কাটে। পড়াশোনার বাইরে আমার মেয়ের বিড়ালের সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটে। এদের খাওয়া দাওয়া করানো, গোসল করানো আমার মেয়ে করে। ওরা নির্দিষ্ট জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করে, তাই আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে না। ডিপ্রেশনে থাকা মানুষগুলোর সবচেয়ে ভালো সময় কাটে বিড়ালের সঙ্গে। বিড়ালের আচার-আচরণ দেখলে মাঝেমধ্যে অবাক হয়ে যাই।
লিয়ানা নামে তরুণী নিজের বিড়াল নিয়ে শোতে অংশ নেন। তিনি বলন, জলি নামে আমার বিড়ালটি এক বছর ধরে পুষে আসছি। পড়াশোনার ফাকে সময় কাটাই বিড়ালের সঙ্গে। ডিপ্রেশনে থাকা মানুষগুলোর সবচেয়ে ভালো সময় কাটে বিড়ালের সঙ্গে।
[35333]
প্রফেসরস পেট কেয়ারের পরিচালক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সাইন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহমুদুল আলন বলেন, যারা বিড়াল লালন পালন করে তাদেরকে এক ছাতার নিচে আনার জন্য আমাদের এই আয়োজন। এখানে বিড়ালের ভ্যাকসিনেশন, বিড়ালকে নিয়ে বিভিন্ন ইভেন্ট তার মধ্যে কেটওয়ার্ক, বেস্ট ক্যাট সিলেকশন, বিড়ালের ফ্রি হেলথ চেকআপ, বিড়ালের লালন পালন ও রোগবালাই সম্পর্কে ধারনা দেওয়া ইত্যাদি ছিল।