ঢাকা রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ইউটিউবে দেখেই রঙিন মাছ চাষে সফল শিক্ষক আজিম

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৯:২৩ এএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ইউটিউবের ভিডিও দেখে শখের বসে রঙিন মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন স্কুল শিক্ষক আজিম উদ্দিন । রঙিন মাছ চাষে খরচ কম এবং লাভও বেশি। তাই তরুণ উদ্যোক্তারা তার বাড়িতে রঙিন মাছ চাষ দেখতে ছুটে আসছেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন পরার্মশও নিচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নের বকুন্ডিয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক আজিম উদ্দিন।

ইউটিউবে দেখে অবসর সময়ে রঙিন মাছ চাষ দেখতে ছুটে যেতেন বিভিন্ন জেলায়। প্রথমে বাড়িতে এ্যাকুরিয়ামে রঙিন মাছ রাখার চিন্তা করেন। পরে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে অল্প পরিসরে মাটির হাড়িতে ১১ হাজার টাকায় ১৬০টি রঙিন মাছ কিনে চাষ শুরু করেন। মাছের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে শুরু করলে বাণিজ্যিকভাবে চাষে আগ্রহী হন তিনি । ১৮টি প্রজাতির বিভিন্ন রঙের মাছ রয়েছে ৬টি চৌবাচ্চায় ও ৩০টি রিং হাউজে। নিজস্ব হ্যাচারিতে মাছের বাচ্চা ফুটানো হয়।

নয়ন-জ্যোতি এ্যাকুরিয়াম ফিস এ্যান্ড হ্যাচারিতে রয়েছে কইকার্প, কমেট, গোল্ডফিস,, গাপফি, মলি, প্লাটি, সোর্ডটেল, প্রিন্টপ্লাটিসহ ১৮ প্রজাতির রঙিন মাছ রয়েছে। প্রিন্টপ্লাটি একটি মাছের সর্বনিন্ম দাম ১০ টাকা ও কইকার্প একটি মাছের সর্বোচ্চ দাম ৬০০ টাকা। এ পর্যন্ত মাছ চাষে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা।

খাদ্য হিসাবে দেওয়া হয় মাছের ভাসমান ফিড। প্রতিদিন সকাল ও বিকালে খাবার দিতে হয়। পানি পরিস্কার ও অক্সিজেন পরিমাণ মত দিতে হয়। মাছের জন্য ওষুধ, ভিটামিন, চুন, পটাশ, মিথাইল ব্লু ও লবন দিতে হয়। রোগ বালাই কম, সহজে ও অল্প সময়ে চাষ করা যায়।

রঙিন মাছ দেখতে আসা মহেশপুর উপজেলার ভৈরবা গ্রামের আতিকুর রহমান বলেন, নয়ন- জ্যোতি এ্যাকুরিয়াম ফিস এ্যান্ড হ্যাচারিতে এসে আমার মনটা ভরে গেছে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন মাছ।

রঙিন মাছ ক্রয় করতে আসা মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, রঙিন মাছ বা এ্যাকুরিয়াম ফিস আমাদের এলাকায় পাওয়া যাবে এটা আমি কখনও ভাবতে পারি নাই। এ মাছগুলো আগে রাজধানী ঢাকা থেকে নিয়ে আসতে হত । কিন্তু এখন জীবননগর পাওয়া যাচ্ছে এটা আমাদের জন্য অনেক উপকার হয়েছে। আমার মত যারা বাড়িতে পুষতে চাই তাদের জন্য অনেক সুবিধা হলো।

উদ্যোক্তা স্কুল শিক্ষক মো. আজিম উদ্দিন বলেন, করোনার সময় স্কুল ছুটি থাকায় ইউটিউবে দেখে অবসর সময়ে আমি এবং আমার ছোট ভাই অ্যাড. শরিফুল ইসলাম রঙিন মাছ চাষ দেখতে ছুটে বিভিন্ন জেলায় যাই। প্রথমে বাড়িতে এ্যাকুরিয়ামে রঙিন মাছ রাখার চিন্তা করি। পরে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে অল্প পরিসরে মাটির হাড়িতে রঙিন মাছ কিনে চাষ শুরু করি। এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে নয়ন-জ্যোতি এ্যাকুরিয়াম ফিস এ্যান্ড হ্যাচারিতে রয়েছে ১৮টি প্রজাতির বিভিন্ন রঙের মাছ। নিজস্ব হ্যাচারিতে মাছের বাচ্চা ফুটানো হয়। রঙিন মাছের উৎপাদন ভালো, সঠিকভাবে পালন করলে এখান থেকে প্রতি মাসে খরচ বাদ দিয়ে ২৫-৩০হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।

জীবননগর উপজেলার সিনয়ির মৎস্য কর্মকর্তা মো. জুয়েল শেখ বলেন, স্কুল শিক্ষক শখের বসে রঙিন মাছ চাষ করলেও এখন তা বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছে । যদি কেউ সঠিক পরামর্শ নিয়ে এ মাছের চাষ করে তা হলে অল্প খরচে চাষিরা লাভবান হবে। এতে দেশের বেকার দূর হবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।