ঢাকা রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ছাত্রকে শাসন করায় শিক্ষককে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত পিতার

হবিগঞ্জ (শায়েস্তাগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে জামেয়া হুসাইনিয়া মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগের ছাত্র বুরহান উদ্দিন (১০) কে দুষ্টুমি করায় শিক্ষক হাজী মাও. সাইফুল ইসলাম বেত দিয়ে শাসন করেন।

এ খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রের পিতা মো. তাজুল ইসলাম স্বপনসহ তার কয়েকজন সহযোগী নিয়ে মাদ্রাসার ক্লাস রুমে প্রবেশ করে ওই শিক্ষককে এলোপাথারি ভাবে ছুরিকাঘাত করে। এতে শিক্ষক সাইফুল ইসলাম গুরুতর আহত হন। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে প্রেরণ করেন।

এদিকে এ ঘটনায় রিপন মিয়া (২৫) আশিক মিয়া (২৩)কে স্থানীয় জনতা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা আটক করে চুনারুঘাট থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। আটককৃত রিপন মিয়া চুনারুঘাট উপজেলার সোনাতুলা গ্রামের আবুল কালামের পুত্র ও আটককৃত আশিক মিয়া উপজেলার হোড়পাড়া গ্রামের আব্দুল মন্নানের পুত্র। মাদ্রাসা ছাত্র শিক্ষক ও স্থানীয় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হবিগঞ্জ রোডে বেরিকেড দিয়ে দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নূরে আলম, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাস ঘটনাস্থলে এসে মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্র স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও চুনারুঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ লিয়াকত হাসান, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব এম এ মজিদ, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আসম আফজল আলী, স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুল মন্নান বাবুল, শামীম চৌধুরী মো. তাজুল ইসলাম, মো. রাসেল মিয়া, মো. ফয়েজ মিয়াসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরে যান চলাচলে স্বাভাবিক হয়।

এর পূর্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। অন্যথায় পরবর্তীতে শায়েস্তাগঞ্জ হবিগঞ্জ রোড অবরোধ করে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলার হুঁশিয়ারি দেন মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাস বলেন, এ বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নূরে আলম বলেন, অপরাধী যেই হোক তাকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।

মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাও. আব্দুল কুদ্দুছ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনাটি মাদ্রাসা ও এলাকার জন্য একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমরা মাদ্রাসার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের নিকট উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।