ঢাকা রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সিংড়ায় সেচ বাধায় তিন ফসলি জমি অনাবাদি!

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নাটোরের সিংড়ায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জমিতে পানি সেচে বাঁধা, মারপিট, হুমকির ধামকির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম এর কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে তিন ফসলি প্রায় ৪ বিঘা জমি।

যদিও প্রতিপক্ষের জমি প্রায় সাড়ে তিন বিঘা আর অন্যান্য ব্যক্তির জমি প্রায় এগারো বিঘা কিন্তু প্রতিপক্ষ মুক্তার আলী প্রায় ষোলো বিঘা জমি ঘিরে পুকুরের বাঁধ নির্মাণ করে পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত নজরপুর গ্রামের সাধারণ কৃষকদেরকে জমিতে চাষাবাদ করতে দিচ্ছে না এবং বর্ষার মৌসুমে পানি সেচের মটর দিয়ে পানি সেচ দিয়ে পুরো প্রায় ষোলো বিঘা তিন ফসলি জমি পানিতে ডুবিয়ে দেয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও প্রতিকার মিলেনি বরং উপরন্তু আরো চড়াও হয়েছে প্রতিপক্ষ মুক্তার হোসেন, তার পুত্র আনিসুর রহমান সহ তার সহযোগিরা।

জানা যায়, উপজেলার কলম ইউনিয়নের নজরপুর গ্রামের কৃষকরা বাপ দাদার আমল থেকে তিন ফসলী জমিতে চাষাবাদ করে আসছে। ২০১৪ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুক্তার আলী কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় ফসলি জমিতে পুকুর খনন এবং বাঁধ নির্মাণ করে। সে সময় এলাকার কৃষকদের মানা নিষেধ তোয়াক্কা করা হয়নি।

এ বিষয়ে কৃষকেরা তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেমন্ত হেনরি কুবির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি ১৩ জুন ২০১৬ তারিখের যার স্মারক-০৫.৪৩.৬৯৯১.০০৭.২০.০০৩.১৬-৮৪৯ মোতাবেক বাঁধ অপসারণ করার মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করলেও তা তোয়াক্কা করা হয়নি।

সম্প্রতি কৃষক শাহ মো. শরীফ উদ্দিন, শাহানুর হোসেন, এনামুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল আজিজ, আশরাফুল ইসলাম ও জয়নাল আবেদীন তাদের জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে তাদের জমির উপর দিয়ে যাতায়াত না করার জন্য মানা নিষেধ করে। যাতায়াতের একমাত্র পথ বন্ধ করার হুমকি দেয় এবং পানি সেচে বাঁধা দেয়। এতে করে উক্ত কৃষকেরা বিপাকে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে অবহিত করলে তিনি সরেজমিনে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানীকে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন।

গত ২৮ জানুয়ারি সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যাওয়ার পর পরই আনিসুর ও তার বাবা মুক্তার হোসেনসহ তার সহযোগীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে জয়নাল আবেদীন ও ফিরোজ আহমেদ কে হত্যার উদ্দেশ্য মারাত্মকভাবে জখম করে।

এ সময় জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে ও হামলা করে ভাংচুর ও নগদ আড়াই লাখ টাকা লুট করে এবং বাজাজ ডিসকভার-১২৫ হোন্ডা ভাংচুর ও নিয়ে চলে যায়। পরে পুলিশ মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন সিংড়া আমলী আদালত, নাটোরে একটি মামলা দায়ের করলে তাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।

কৃষক শাহ মো. শরিফ ও শাহানুর বলেন, আমরা কৃষক পরিবার। কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। দীর্ঘদিন থেকে আমাদের কৃষি জমি বিনষ্ট করার লক্ষে পুকুর খনন করেছে এতে আমাদের তিন ফসলী জমি এক ফসলি জমিতে পরিনত হয়েছে। এতে করে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।

অভিযুক্ত আনিসুর রহমান বলেন, ঐ সব জমিতে আমরা সেচ দিয়ে পানি দিতাম। তাদের সাথে বিরোধ এজন্য আর পানি দেয়ই না। বরং বাড়াবাড়ি করলে যাতায়াতের পথ বন্ধ করার হুমকি প্রদান করেন তিনি।