ঢাকা রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

খালি চোখে কোরআন পড়েন শতবর্ষী মফিজ মাস্টার

সাগর মিয়া, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
মফিজ মাষ্টার। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মফিজ মাষ্টারের বর্তমান বয়স শত ছুঁই ছুঁই। শত বছরের এই প্রবীন ব্যক্তি এখনো সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক ভাবেই করতে পারেন কোরআন ও বই পুস্তক খালি চোখে পড়তে পারেন। এছাড়াও বাংলা ও ইংরেজিতে লিখতেও পারেন তিনি ৷ গ্রামের মানুষের কাছে এই বয়সী মানুষটির আলাদা ভক্তি রয়েছে।  

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ডাংরি গ্রামে তার বাড়ি ৷ সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি না করলেও স্বাধীনতার আগে থেকেই গ্রামে ছাত্রদের পড়াতেন নিজ উদ্যোগেই ৷ তাই গ্রামে তার পরিচিতি মাস্টার হিসেবেই। পড়ানোর সুবাদে তার হাজারো ছাত্র সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ চাকরিতে রয়েছে অনেক ছাত্র।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মফিজ মাস্টারের ৩ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে ৷ সবারই বিয়ে হয়েছে ৷ ছেলে-মেয়েরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে প্রতিষ্ঠিত ৷ বাড়িতে তার সহধর্মিণী রয়েছে ৷ তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। বড় ছেলে পিতা-মাতার দেখ ভাল করে থাকেন ৷ মফিজ মাষ্টার ধর্ম পালনে অধিক মনোযোগী ৷ পরহেজগার মানুষ হিসাবে এলাকার সবার নিকট সম্মানিত ব্যক্তি ৷ এলাকার যে কোন অনুষ্ঠান হলে তিনি আমন্ত্রিত হন ৷ 

এছাড়াও গ্রামের মানুষের বিশেষ আমন্ত্রণে প্রায় প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি যান ৷ সবাই তার নিকট দোয়া নেওয়ার জন্য আসেন। মানুষ খুশি হয়ে যা দেন, তাই হাসিমুখে গ্রহণ করেন ৷ তাই দিয়ে নিজের চলার খরচ মিটিয়ে থাকেন। বই দিলে তিনি খালি চোখে অনায়াসে পড়তে পারেন ৷ এছাড়াও একাই এখনো বাড়ি যেতে পারেন তিনি। বর্তমানে কানে সামান্য কম শুনলেও স্মরণ শক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে ৷ দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রমজান মাসের সবগুলো রোজা তিনি পালন করে থাকেন ৷ 

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ডাংরি গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‍‍`চাচা (মফিজ মাষ্টার) খুবই ভালো মনের মানুষ। এখনো তিনি অনায়সে কুরআন ও বইপত্র চশমা ছাড়াই পড়তে পারেন ৷ বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই ভালো লাগে ৷ আমাদের গ্রামের সবাই ওনাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে থাকি ৷

মফিজ মাস্টার বলেন, ‍‍`আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি রোগমুক্ত হয়ে এখনো সুস্থ আছি ৷ বর্তমানে আমার বয়স ৯৫ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে দেখেছি। তাদের আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করতে উদ্ভুদ্ধ করতাম। আমার কাছ থেকে দোয়া নিতো তারা ৷ যতদিন বেঁচে আছি মানুষের মধ্যে ধর্ম প্রচার ও আল্লাহর ইবাদত করে কাটাতে চাই ৷‍‍`