চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পূর্ব-শত্রুুতার জেরে দু`পক্ষের সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে। এসময় বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। ভেঙ্গে তচনচ করা হয় স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়। ঘটনায় উভয় পক্ষের দু`জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শনিবার গভীর রাতে উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের ফকিরাচাঁন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দুই পক্ষের ফসলী জমির দখল-বেদখল নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় মনির ও শামসুল আলমের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে শনিবার রাতে শামসুল আলমের ভাতিজা ও স্থানীয় যুবদল নেতা মহিউদ্দিনকে একা পেয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মারধর করে যুবদল নেতা আমীন তালুকদার, মনির, মান্নানসহ আরো কয়েকজন।
এতে গুরুতর আহত মহিউদ্দিনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে সেখানে থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনার পর ক্ষুব্দ মহিউদ্দিনের অনুসারীরা আমীন তালুকদার, মনির, মান্নানসহ অন্যান্যদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এসময় আমিন তালুকদার, মো. মনির, নুরুল আলম, মান্নান, মো. জামাল, মো. সেলিম ও জনৈক মাহাবুব আলমের ঘর-বাড়ি ও ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ফটিকছড়ি থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে সেখানে একাধিক বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ভেঙ্গে দেয় বিএনপির কার্যালয়ও।
পাইন্দং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মহিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনে সংক্ষুদ্ধ দলের সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছি। তবে দলের কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনা কেউ আমাকে বলেন নি। দেখছি।’
ক্ষতিগ্রস্থ মো. মনির বলেন, ‘আমি ও আমার ভাই মান্নানসহ ৪-৫ জনের ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট চালিয়েছে। আমাদের এক বছর বয়সী সন্তান ও অন্তাসত্বা গৃহবধুকে তুলে নিয়ে যায়। এছাড়াও তারা আমরা দুই ভাইয়ের প্রায় ৫ লক্ষাধিক নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে। আমার ভাইয়ের সিএসজি অটোরিকশা ভাংচুর, মোটরসাইকেল ও ট্রলি-গাড়ি অগ্নিসংযোগ করে জালিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনার পর আমরা এলাকা ছাড়া।’
অপর পক্ষের আহত মহিউদ্দিনের ছোটভাই নাঈম উদ্দিন বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ওপর হামলার পরে তাকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে নিয়ে গেছি। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের ঘর-বাড়িতে কি করেছে তা আমাদের জানা নেয়। অতীতে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমা রয়েছে। তারা এলাকার সন্ত্রাসী।’
ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানালেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. নুর মিয়া কোম্পানী। তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষই স্থানীয় বাসিন্দা। কারো বিরুদ্ধে গিয়ে কথা বলা সম্ভব নয়। এদেশে ন্যায়কে ন্যায় বলা যায় না। এটাই সত্য। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমদ বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। আহত মহিউদ্দিনের মা বাদি হয়ে ৫-৬ জনকে সুনির্দিষ্ট আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাত আছে।’