ঢাকা সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

আমার সব শেষ হয়ে গেছে: হাসপাতালে ভর্তি হানিফের স্ত্রী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার কি হবে এখন। আমার স্বামীকে এভাবে মেরে ফেললো কারা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়া হানিফের স্ত্রী শান্তি খাতুন। রবিবার সকালে হানিফের স্ত্রী শান্তি খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে হরিনাকুন্ডু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের ত্রিবেণি শ্মশান খাল এলাকায় হানিফ‌ তার স্বামী হানিফকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তার সঙ্গে আরো দুই সহযোগিকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হানিফ আলী (৫৬) ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দিনের ছেলে। তার সঙ্গে খুন হন তারই শ্যালক একই উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ হোসেনের ছেলে লিটন হোসেন (৩৬) ও কুষ্টিয়া ইবি থানার পিয়ারপুর গ্রামের আরজান হোসেনের ছেলে রাইসুল ইসলাম (২৭)। তাদের সবাইকে মাথায় গুলি করে মারা হয়েছে।

এদিকে ওই রাতেই হত্যার দায় স্বীকার করে চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর নেতা কালু পরিচয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে খুদে বার্তা পাঠায়। যদিও বার্তা নিয়ে পুলিশ স্থানীয়দের মধ্যে ধোয়াশা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধায় হানিফের লাশ তাদের গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। সে সময় হানিফকে দেখার জন্য মানুষ জড়ো হয়। পড়ে জানাজা শেষে হানিফের দাফন সম্পন্ন হয়। এদিকে রোববার সকালে হানিফের স্ত্রী শান্তি খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে হরিণাকুন্ডু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। পরে দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হানিফের স্ত্রীর মহিলা ওয়ার্ডের একটি বেডে শুয়ে আছে। তার হাতে স্যালাইনের সুচ লাগানো রয়েছে, পাশে রয়েছে একটি স্ট্যান্ডে ঝুলছে স্যালাইনের ব্যাগ। সে সময় দেখা যায় তার বিছানার চারিপাশে অসংখ্য নারী তাকে ঘিরে রেখেছে। কাছে যেতেই হানিফের স্ত্রী সংবাদকর্মী পরিচয় শুনে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, জানেন ভাই কারা যেন আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে, আমার সব শেষ করে দিয়েছে। এমন সময় হানিফের স্বজনরা (পুরুষ) এসে বলে ভাই আমরা খুব ঝামেলার মধ্যে আছি দয়া করে আপনারা এখান থেকে চলে যান। আমরা কিছু বলতে পারব না এখন। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার মত কোন পরিস্থিতি নেই আমাদের। আপনারা এখনই চেলে যান।

হরিনাকুন্ডু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সএর চিকিৎসক ডাক্তার, আলামিন বলেন, শান্তি খাতুন কে সকালে আমাদের হাসপাতালে আনে। তার প্রেসার অনেক বেশি। মনে হচ্ছে তিনি মানসিক চাপে আছেন। পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট দেখে বোঝা যাবে মূলত সমস্যা কি হয়েছে।