গত বুধবার মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া এমসি কলেজ শাখার দায়িত্বশীল, কলেজ ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকের ১১১ নম্বর রুমে অবস্থানকারী মিজানুর রহমান রিয়াদের উপর ছাত্রশিবিরের কিছু কর্মী বর্বোরচিত হামলা করে।
এ ঘটনা নিয়ে সিলেটসহ সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে রোববার বাদ আসর সিলেটে আনজুমানে আল ইসলাহ ও জামায়াতে ইসলামীর যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ছাত্রশিবিরের হামলায় দায় স্বীকার করে জামায়াত নেতারা দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এ ধরনের ঘটনা আর যেন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
বৈঠক থেকে এক ভিডিও বার্তায় সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এমসি কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি। বিশেষ করে ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সেখানে যে বাড়াবাড়ি হয়েছে আমাদের দৃষ্টিতে সেখানে ছাত্রশিবিরের কিছু সংখ্যক কর্মী সেটার সাথে জড়িত। তারা যা করেছে সেটি অন্যায়ভাবে করেছে। এটি দুঃখজনক।
দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, আমরা পরস্পরই ইসলামী সংগঠন, আমরা দেশ ও জাতির ভালো চাই। আমরা এই দেশে একটি ইসলামী পরিবেশ চাই। আল্লাহর রাসূল সা. এর আদর্শের আলোকে একটি সুন্দর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হোক, আমাদের উভয় সংগঠনেরই একই উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। এই জায়গা থেকে নিজেদের মধ্য থেকে যদি কোনো ভুলত্রুটি বা ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয় সেখানে ইসলামবিরোধী পক্ষ মূলত উপকৃত হবে। সেই অবস্থায় যদি আর কোনো ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়, আমরা পরস্পর বসে এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসার দিকে যাবো। তিনি বলেন, এমসি কলেজের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদ সে যেভাবে আহত হয়েছে আমরা তার প্রতি সহমর্মিতা ও দুঃখ প্রকাশ করছি। তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও সুস্থতা কামনা করছি। তার পরিবারবর্গের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। বিশেষ করে বিগত জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাদের উত্তম জাযা আল্লাহর পক্ষ থেকে কামনা করছি। যারা আহত রয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি। যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের রক্তের দাবি অনুযায়ী আমরা বৈষম্যহীন সুন্দর ও শান্তিময় দেশ ও সমাজ গঠনে উভয় সংগঠন ঐকমত্যভাবে কাজ করবো, এ ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাসিক পরওয়ানার সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী, আল ইসলাহ নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নজমুল হুদা খান, শ্রমিক ফেডারেশন নেতা লোকমান আহমদ, আল ইসলাহ নেতা মাওলানা জইন উদ্দিন, মাওলানা জিয়াউল ইসলাম মুহিত প্রমুখ।