নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নে রাতের আধারে মো. শাহজাহান নামের এক ব্যক্তির গরুর খামারে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। এতে খামারে থাকা ৮টি গরু অগ্নিদগ্ধ হয়, যার মধ্যে ১টি গরু আগুনে পুড়ে মারা যায়, ২টি জবাই করে দেওয়া হয়েছে।
আগুনে খামারটির প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তের। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে সুন্দলপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড কালা মিয়া মেম্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি শাহজাহান বলেন, গত ২০ বছর ধরে গরুর খামারে সাথে জড়িত তিনি। তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম এ খামার। বর্তমানে তার খামারে ৬টি বড় গরু ও ২টি বাচুর ছিলো। রোববার রাত ১টার দিকে গরুর দুধ নেওয়ার পর খামার বন্ধ করে নিজের বসত ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে খামার থেকে গরুর চিৎকারের শব্দ পেয়ে জানালা দিয়ে খামারে আগুন জ্বলতে দেখেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, খামারে থাকা গরুগুলোর গায়ে আগুন জ্বলতে দেখে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়ায় তারা বের হতে পারেননি। পাশে থাকা তার দুই ভাইয়ের ঘরের বাইরের দরজা একইভাবে আটকে দেওয়া হয়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বাইরে থেকে আটকানো দরজা খুলে দিলে তারা সবার সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরআগে খামারে থাকা ৮টি গরু ও গোখাদ্যগুলো পুড়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাড়ির একপক্ষের সাথে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তারা গতকয়েকদিন ধরে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলো। এর জের ধরে খামারে পেট্রোল দিয়ে আগুন দিতে পারেন বলে তিনি ধারণা করছেন। এছাড়াও আগুনের বিষয়টি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়ার পর সেই ব্যক্তিদেরও হুমকি দিচ্ছে ওই পক্ষ।
কবিরহাট উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা শাহজালাল মোহাম্মদ ইউনুস জানান, সবগুলো গরুর শরীরের এক দ্বিতীয়াংশ ও তৃতীয়াংশ পুড়ে গেছে। যার মধ্যে ২টি জবাই করে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোকে আমরা যদিও প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি তবে তাতে মনে হয়না গরুগুলো বাঁচানো সম্ভব হবে। তারপরও আমাদের টিম চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।