বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে দ্রুত একটি সুন্দর নির্বাচন চাই। ১৫ টি বছর হাসিনা সরকার আমাদের উপর যে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে একটি গণতান্ত্রিক দলের উপর এতো নির্যাতন করেছে। থানায় নিয়ে গুলি করে মেরেছে পঙ্গু করে ফেলেছে। রাস্তায় বাড়ি কলকারখানা চাকরি করতো তাদের তুলে নিয়ে গেছে। এই জুলুম থেকে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও বাদ দেন নি। ৬ বছর জেল হাজতে এমনকি বাড়িতে রেখেও নির্যাতন করেছে। ঢাকার ধামরাইয়ে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে ঢাকার ধামরাইয়ের পৌরসভার যাত্রাবাড়ি মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ফখরুল আরো বলেন, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের পতন হলেও কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয় নি। পালিয়ে ভারত অবস্থান করছে আর সেখান থেকেই দেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। দেশকে রসাতলে নিয়ে গিয়েছিল এই স্বৈরাচার সরকার। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখার দাবিতে, অবনতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির দাবিতে, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষনার দাবিতে এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবি পূরণ করতে হবে। জনগণকে ভয় দেখিয়ে নয় তাদের কাছে গিয়ে ভালোবাসা দিয়ে নিজেদের কাছে আনতে হবে। তারেক জিয়ার ৩১ দফা পাড়া মহল্লায় জনগণের দোড় গুড়ায় পৌছাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, তারেক জিয়ার নামে ৮৬ টি মামলা দিয়েছিল। আমরা এখনো আদালতে হাজিরা দিতে হয়। আমরা কি ত্যাগ স্বীকার করেছি তা বুঝতে হবে। বার বার বিএনপিকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারে নি। এমনকি আলেম উলামাদেরকেও নির্যাতন করতে কুন্ঠিত হয় নি। শাপলা চত্বরের কথা বুলে যায় নি। একটি মাত্র দল আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেছে। ভোটের অধিকার ছিল না। ভোট কেন্দ্রে কুত্তা থাকতো কোন মানুষ কেন্দ্রে ভোট দিতে যায় নি। নির্বাচনের নামে করছে প্রহসন। তামাশা দেখিয়েছে আমাদের এই ফ্যাসিষ্ট হাসিনা।
ফখরুল আরো বলেন, একদিন ফেইসবুক এ দেখেছি ৩২ নম্বরের বাড়িটি কেন ভাঙা হলো আমার কি অপরাধ। কিন্তু তিনি এখনো জানে না তার কি অপরাধ। দেশটাকে বিক্রি করে ফেলেছে। সে দিন সেনাবাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশের নেতাকর্মীদের রেখে দেশ ফেলে পালিয়ে গেছে। কোথায় আমাদের নেত্রী তো দেশ থেকে পালায় নি। ফ্যাসিষ্ট হাসিনা ভারত থেকে ষড়যন্ত্র করছে। আজ দেশে আওয়ামী লীগের লোকজন কোথায়। আজ ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। কারণ তারা দেশে লুটপাট চালিয়েছে। জনগণ তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম নিয়ে আজ আমরা চিন্তাগ্রস্ত। চাল ৮০ টাকা কেজি। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে গেলে সুশৃঙ্খল থাকতে হবে। মানুষকে ভয় দেখিয়ে নয় ভালোবাসা দিয়ে কাছে আনতে হবে। অনেকেই মনে করেন বিএনপি চাঁদাবাজি করছে। মিথ্যে কথা। আওয়ামী লীগ এই মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। বিএনপির মধ্যে কোন চাঁদাবাজি নেই। ভোটের দিন মানুষ যেন বলতে পারে আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দিবে। বিএনপিকে কোনঠাসা করার জন্য ফ্যাসিবাদরা একনো চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু পারবে না। যা ১৬ বছরে পারে নি। এদেশের ছাত্র জনতা হাসিনা সরকারকে তার উপযুক্ত জবাব দিয়ে দিয়েছে।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আসফাকের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ৷ এসময় অন্যান্য দের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদীকা সুলতানা আহম্মেদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে অমি, ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি তমিজ উদ্দিন, ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ সহ ঢাকা জেলার ৫টি উপজেলা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ৷