শতবর্ষী মেহগনি গাছের ছায়ায় স্বস্তি

হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম

শতবর্ষী মেহগনি গাছের ছায়ায় স্বস্তি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বিদ্যালয়ের টিফিনের ফাঁকে অথবা খেলা শেষে অনেক শিক্ষার্থীর বিশ্রাম নেওয়ার অন্যতম স্থান হলো শতবর্ষী মেহগনি গাছের ছায়া। আবার স্থানীয় অনেকে আসেন গাছের নিচে বসে আড্ডা দিতে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মঞ্চও করা হয় এই গাছের নিচে। মেহগনি গাছটির অবস্থান লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার আর এম এম পি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে।

১৮৬৭ সালে তুষভান্ডার ওই উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও গাছটির বয়স কত এর সঠিক হিসেব কারও জানা নেই। তবে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার আগে কিংবা পরপরই গাছটি তুষভান্ডার জমিদার পরিবারের কেউ রোপণ করেছিলেন বলে ধারণা করছেন এ স্কুলের প্রবীণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

স্থানীয়রা জানায়, মেহগনি গাছের নিচে জনসভা করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদসহ প্রমুখ নেতা।

 এখান থেকেই বিভিন্ন আন্দোলনে, মিছিল, মিটিং শেষে গা জিরিয়ে নেওয়া, স্কাউটদের প্রশিক্ষণ, বড় বড় রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ হয়। টিফিনের ফাঁকে, খেলার শেষে সহপাঠী, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা চলত এই গাছের নিচে। অনেকেই গাছের নিচে বসে পড়েন গল্পের বই নিয়ে পড়তে।

বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক অশোক কুমার ভট্টাচার্য জানান, তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৫ সালে এই বিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং ১৯৬৫ সাল থেকে এই বিদ্যালয়েই শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি ওই সময় থেকেই দেখে আসছেন এই খেলার মাঠে তিনিটি বড় বড় গাছ ছিল। ১৯৮৩ সালে বজ্রপাতে একটি গাছ পুড়ে গেলে ওই সময় ওই গাছের সঙ্গে আরও একটি গাছ বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা লাবু রহমান বলেন, ‘গাছটি আমাদের এলাকার সম্পদ। এ ধরনের শতবর্ষী বৃক্ষ আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। গাছগুলো আবহমানকাল থেকে আমাদের সংস্কৃতিচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনা করা হয়। আমরা চাই বন বিভাগ গাছটির সার্বক্ষণিক দেখভাল করুক। গাছটি আরও দীর্ঘ সময় মানুষের মাঝে ছায়া দিয়ে আসুক।’

কালীগঞ্জ বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের মেহগনি গাছ এখন দেখতে পাওয়া যায় না। এটা সংরক্ষণ-রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব আমাদের সবার।’

আরবি/জেডআর

Link copied!