ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খায়নি!

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম

ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খায়নি!

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খায়নি! প্রবাদটি মিলে গেছে দুর্নীতি ঢাকতে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেই ফেঁসে গেলেন পাইকগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার বহু অপকর্মের হোতা ওলামা লীগ নেতা অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বহু অপকর্মের হোতা মাদ্রাসার জমি আত্মসৎকারী মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসকারী ওলামা লীগ নেতা অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের অপসারণের দাবিতে ছাত্র-জনতা, জমি দাতা ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ দিন মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর নিজ বাড়িতে দুর্নীতি ও অপকর্ম আড়াল করতে তড়িঘড়ি করে কয়েকজন সাংবাদিকদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সাত্তারের সকল অপকর্ম আড়াল করে নিজেকে ধুঁয়া তুলসী পাতা সাজিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও বেরিয়ে আসে অনেক অজানা কাহিনী। এ যেন ঠাকুর ঘরে কে রে ‍‍`আমি কলা খায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, সোমবার সকালে দুর্নীতি আড়াল করতে মোটা অংকের টাকার মিশন নিয়ে মানববন্ধনের ডাক দিলেও মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ও  এলাকাবাসীর সাড়া না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে যান। এসময় বিকেলে হাতে গোনা ৫ থেকে ৬ জন সাংবাদিককে বাড়িতে নিয়ে  কাকুতি মিনতি করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তবে সেই সংবাদ সম্মেলনে নিজের ওকে সাফাই সাক্ষী হিসেবে হাজির হন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সে মাদ্রাসার দাতাদের কাছ থেকে জমি কিনে নাম জারি করেছেন। এই বিষয়ে জানতে জমিদার তাদের সাথে কথা হলে জানান, আমরা সল্পমুল্যে মাদ্রাসাকে জমি দিয়েছি। কিন্তু দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ওলামা লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার দলের প্রভাব বিস্তার করে নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। সেই জমিতে ৪ কোটি টাকার বিল্ডিং তৈরির সময় নিজের নামে জমি মাদ্রাসায় লিখে দিবেন বলে তিনি স্বাক্ষর করেন। জমি দাতা শেখ ইউনুস আলী বলেন, মাদ্রাসার জমি ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কয়েক দফা মিটিং করে অধ্যক্ষ রাজী হলে সেখানে সরকারি ভবন তৈরি করা হয়।

কিন্তু এখন সে মেইন সড়কের পাশে অবস্থিত মাদ্রাসার জমি বিনিময় করতে চায়। জমি দাতা শেখ সাহাজুদ্দীন বলেন, চার লাখ টাকার জমির বিনিময়ে তিনি কোটি টাকার সম্পত্তি ( মাদ্রাসার পজিশন ঘর) নিতে চাইছে। আমরা মাদ্রাসার জমি মাদ্রাসার নামে রেজিষ্ট্রেশন করে দেওয়ার দাবি জানাই। এদিকে রবিবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন শেষে অধ্যক্ষের অফিসে ছাত্র জনতা তালা লাগিয়ে দেয়। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে সেই তালা কেটে অফিসে প্রবেশ করে গুরুত্বপূর্ণ দলিল ও কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানান, আব্দুস সাত্তার যদি ভালো মানুষ হয়, তাহলে কেন লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে গোপনে তালা কেটে প্রবেশ করবেন! এই ঘটনায়  এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে কোন মূল্যে জমি রক্ষা করতে লাখ লাখ টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ইতিমধ্যে সব অপকর্ম আড়াল করে রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাড়িতে গিয়ে টাকার লোভ দেখাচ্ছেন।

আবু/এস

Link copied!