মাহিন্দ্রা (থ্রি হুইলার) গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিতে সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় পরাপর দুই জন শিক্ষক নিহত ও দুই জন পঙ্গু হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সালথা-ফরিদপুর সড়কের মেম্বার গট্টি এলাকায় এই বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় সড়কের দুই পাশে গাছের গুড়ি ও বাঁশ ফেলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী, সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের দাবি নেমে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা ইউএনওর কাছে বেশ কয়েকটি দাবি-দাওয়া তুলে ধরে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।
বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখে শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, শাহিন খা, সাকিবুল ইসলাম, সজিব শেখ, তুহিন হাসান, মাইমুনা সুলতানা, মারজিয়া ও রাদিয়া আক্তার। তারা বলেন, শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে মাহিন্দ্র গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে রাঙ্গারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা বেগম নিহত হন। এর আগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এসকেন্দার আলী মারা যান। এ ছাড়া সম্প্রতি মাহিন্দ্রা দুর্ঘটনায় খারদিয়া মিয়া মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিয়া আক্তার গুরুতর আহত হন। পরে তার পা কেটে ফেলা হয়। একইভাবে ভাওয়াল সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান পঙ্গু বরণ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সালথা-ফরিদপুর সড়ক মাহিন্দ্রা গাড়ি দখল করে নিয়েছেন। এই গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। অদক্ষ্য ও নেশাগ্রস্ত ড্রাইভাররা মাহিন্দ্রা গাড়ি চালাচ্ছেন। এমনকি শিশুদের হাতে মাহিন্দ্রা গাড়ি তুলে দিচ্ছে পরিবার। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছে। এমন অবস্থায় আমরা এই সড়কে আর মাহিন্দ্রা গাড়ি চালাতে দেব না।
সালথা-ফরিদপুর সড়কে বাস চালু করার জন্য তিন দিনের আল্টিমিটাম দিয়ে বলেন, সালথা-ফরিদপুর সড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে নতুন করে বাস চালু করার জন্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করছি। আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি মাহিন্দ্রা বন্ধ করে দিয়ে বাস চালু না করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পরে শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, শিক্ষার্থীরা সালথা-ফরিদপুর সড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে বাস চালুর দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল। খবর পেয়ে ওসিসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর বিষয় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। এবং এর একটা সমাধান করে দেব।
তিনি বলেন, পাশাপাশি বাস চালু করার বিষয় মালিক সমিতির সাথে যোগাযোগ করা হবে। আশা করি, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ হবে।