ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি...

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৪:৩১ পিএম
ফাইল ছবি

ময়মনসিংহের সদরে সিএনজি চালক ছফিনুল ইসলাম (৪৫) কিস্তিতে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে উল্টো জাল ষ্ট্যাম্প বানিয়ে সমিতির পরিচালক রুহুল আমিনের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করছেন।

এ ঘটনায় জাল ষ্ট্যাম্প উদ্ধার ও সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করার অভিযোগ এনে আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন সমিতির পরিচালক রুহুল আমিন। একটি মামলা দু‍‍`জন ও অপর মামলায় তিনজনকে আসামী করা হয়।

বাদী রুহুল আমিন জামালপুর সদর উপজেলার জুলহাস উদ্দিনের ছেলে ও নবধারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি. পরিচালক এবং অভিযুক্ত ছফিনুল ইসলাম ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর হরিপুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। জেলা জজ কোর্টের আইনজীবি অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার নথির বরাত তিনি বলেন, রুহুল আমিন সরকারী রেজিস্ট্রেশন ভুক্ত নবধারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি. নামে একটি সমিতি পরিচালনা করে আসছেন। সমিতির প্রধান কার্যালয় নগরীর বলাশপুর এলাকায়। আনুমানিক এক বছর পুর্বে শম্ভুগঞ্জ শাখা থেকে অভিযুক্ত ছফিনুল ইসলাম কিস্তিতে পরিশোধ যোগ্য এক লাখ টাকা ঋণ নেয়। ছফিনুল ইসলাম কিস্তি পরিশোধ না করায় গত বছরের ১৬ নভেম্বর সকালে সমিতির ৪ কর্মকর্তা ছফিনুলের বাড়িতে যান। বাড়িতে গিয়ে টাকার জন্য চাপ দেয়। এতে ছফিনুল ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের সাথে অশালীন আচরণ করে ও মারধর করে। এমতাবস্থায় সমিতির চার কর্মকর্তা দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হতে চাইলে পিছন ছফিনুল চিৎকার করে বলে তোদের সমিতির মালিকের কাছে ২০ লাখ টাকা পাই এবং তা উদ্ধার করব। এরপর ওই চার কর্মকর্তা আবারও ফিরে ছফিনুলের বাড়িতে যায় এবং জানতে চায় কিভাবে ২০ লাখ পাবেন। পরে ছফিনুল তার সঙ্গীরা ১০০ টাকার তিনটি নন জাডিসিয়াল স্ট্যাম্পে মালিক ২০ লাখ টাকা নিয়েছে বলে দেখায়। যা সম্পূর্ণ জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী করা ষ্ট্যাম্প। এমতাবস্থায় চার কর্মকর্তা ফিরে এসে তাদের পরিচালককে বিস্তারিত বলেন। এর আগে গত বছরের ২৫ অক্টোবর কিস্তি আনতে গেলে ছফিনুল ও তার সঙ্গীরা কিস্তি না দিয়ে উল্টো তাদের অশালীন আচরণ ও অপমান করে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর ও একই বছরের ৮ ডিসেম্বর পৃথক দুটি মামলা আদালতে দায়ের করা হয়। একটি মামলা তদন্তের জন্য সিআইডি ও অপর একটি মামলা কোতোয়ালী মডেল থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে আদালত।

এবিষয়ে জানতে ছফিনুল ইসলামের নাম্বারে ফোন করা হলে তার ছেলে রাব্বি বলেন, আমরা টাকা তুলে ছানাউল নামে একজনকে দিয়েছিলাম। সে তিন কিস্তি দেয়ার পর আর দেয়নি। শুনেছি ছানাউল সমিতির পরিচালকের কাছে ২০ লাখ টাকা পান। এজন্য কিস্তি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

নবধারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি. পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, আমাদের শম্ভুগঞ্জ শাখা থেকে ছফিনুল গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে এক লাখ টাকা ঋণ নেয়। পরে কয়েক কিস্তি দেয়ার পর তা বন্ধ করে দেয়। আমার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কিস্তির জন্য গেলে মারধর ও অশালীন আচরণ করে। ছফিনুল একজন মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারক। আমাকে টাকা ফেরত না দেয়ার জন্য উল্টো আমার সাক্ষর জাল করে তিনটি ষ্ট্যাম্পে বসিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে। যা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এসব ঘটনায় বিচার চেয়ে আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেছি।