বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছন, নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে শুক্রবার। সেটা ভালো। দলটা করে মাঠে নামেন আর আপনার দলের যারা মন্ত্রী সভায় আছেন তাদেরকে নামিয়ে আনেন। গাছেরটাও খাবেন আর নীচেরটাও খাবেন দুইটা এক সাথে খেতে পারবেন না। একটা খাবেন। হয় রাজনৈতিক দল করবেন রাস্তায় নামবেন আর না হয় সরকারেরটা খাচ্ছেন খান, চুপ করে বসে থাকেন।
ডিক্লারেশন অব ৫ আগস্ট তাদের লেখাটা পড়লাম কোনো জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের কথাটা নেই। একাত্তরে নাকি জনযুদ্ধ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। অর্থাৎ যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে না তারা রাষ্টীভাবে রাষ্ট্রদ্রোহী। তিনি মঙ্গলবার বিকালে জেলা শহরের রাজবাড়ি ময়দানে গাজীপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রা পথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক এমপি একেএম ফজলুল হক মিলন।
সদস্য সচিব চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ূন কবির খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক শাফিন।
বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক প্রফেসর রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, শাহ রিয়াজুল হান্নান, বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক, ইসলাম উদ্দিন, হুমায়ুন কবির মাস্টার, হেলাল উদ্দিন, আক্তারুল আলম মাস্টার, আবু তাহের মুসল্লী, জয়নাল আবেদীন রিজভী, দেওয়ান মোয়াজ্জেম, বিল্লাল হোসেন বেপারী, যুবদলের নেতা আতাউর রহমান মোল্লা প্রমুখ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা নির্বাচনের কথা শুনিনা। সকাল বিকাল সংস্কারের কথা শুনি। ১৭ বছর যাবৎ সংস্কারের কথা শুনছি। মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সংস্কার শুরু করেছে। সে সংস্কারের যা অসমাপ্ত আছে সেটা সমাপ্ত করার দায়িত্ব কি এসরকার নিয়েছে কিনা আমি জানিনা।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় এ যে সংস্কারটা একটা কু সংস্কার। এ সংস্কার মানে বিরাজনীতি করণ, এ সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমাদের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার, গণতন্ত্রের মূলধন যা বলেন সব সাজে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছি নির্বাচনের জন্য। এটা নতুন কোনো দাবি না। এ নির্বাচনটা এখনো দেয়নি। তিনি বলেন, কে কে যেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। এটা কতটুকু সত্য আমি জানিনা। মাঝখানে জামায়াতে ইসলামী ঢুকে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চায়। ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে, না জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সেটা বিরাট প্রশ্ন। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করিনি।
আমরা আন্দোলন করেছি জনগণের ভোটের অধিকারের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছতার সাথে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একটি পার্লামেন্ট, একটি সরকার। সেটি এখনো হয়নি। আমরা আন্দোলন করেছি একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের জন্য। জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য।
জুলাই ২৪ তারিখ থেকে ৫ আগস্ট ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে নেমেছিল আমরা তাদেরকে প্রথম দিনই নৈতিক সমর্থন দিয়েছি। তারপর আমরা সর্বাত্বক সমর্থন দিয়েছি। তারপর আমরা ছদ্ববেশে আমরা সে আন্দোলনে ঢুকে গেছি।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের বিজয়ের ফসলের শিরোপা তোমাদের মাথায় তুলে দিয়েছি। অবহেলা, অহংকার বোধে সে শিরোপা যেন মাথা থেকে না পাড়ে যায়। তোমরা কষ্ট না পেলেও জাতি কষ্ট পাবে। সম্প্রতিকালে যে অহমিকাসুলভ কথাবার্তা, রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা এটা অত্যান্ত গর্হিত কাজ।
আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থায় আমরা একটি সঠিক নির্বাচন চাই। নিরপেক্ষ, নির্দলীয় নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ হাসতে হাসতে ভোট কেন্দ্রে যাবে। একটা উৎসবের মধ্যে যার যার ভোট সে সে দেবে। যার ভোট সে দেবে। যাকে খুশি তাকে দেবে এবং দিনের ভোট দিনে দেবে রাতে দেবে না।
তিনি বলেন, সরকারের ভাবসাপে মনে হয় আগামি নির্বাচন হলে বিএনপি যে কত সিট পাবে তা গুনে শেষ করা যাবে না। সে জন্য বিএনপিকে কিভাবে ঠেকাবে সে জন্য একাত্তুরের পরাজিত শক্তি, ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি ভিতরে ভিতরে এক হচ্ছে। তারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
এ মূহুর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার। নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণের কাছে কেউ দায়বদ্ধ থাকে না। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না।
ড. ইউনুস সাহেব বলেছেন, ছাত্ররা তাকে ক্ষমতায় এনেছে। উনি এখন ছাত্রদের খেদমত নিয়ে ব্যস্ত। জনগণ জাহান্নামে যাক। তাদের মাত্র দায়বদ্ধতা আছে ছাত্রদের কাছে। ছাত্রদের প্রতিনিধি ডানে বামে তিনজন বসিয়ে নিয়েছেন আর সারারাত বসে তারা দল বানাচ্ছেন।
এখন প্রশাসনে যাবেন যেখানেই যাবেন সব আওয়ামী লীগ জামায়াত হয়ে গেছে। মনে করে জামায়াত ক্ষমতায় এসে গেছে। আজকে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং সকল উপদেষ্টার কাছে বিনীতভাবে বলবো জনগণের আকাঙ্খা এবং প্রত্যাশার বাইরে আপনারা পথ চললে আপনারা হোঁছট খেতে পারেন।