খুলনার কয়রার নাকশা গ্রামের লোকমান সরদারের বাড়ি থেকে হামিদ সরদারের বাড়ির অভিমুখে রাস্তার প্রধান সড়কে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে পানিবন্দি হয়ে পড়েন এই এলাকার কয়েকশত পরিবার।
জলবদ্ধতা নিরসনে গ্রামবাসীর পক্ষে নাকসা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক হারুনুর রশিদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। প্রায় পাঁচ মাসের মতো সময় অতিবাহিত হলেও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করেননি। তার এমন কর্মকাণ্ডে নিন্দা জানিয়েছেন সুধী সমাজের লোকজন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নাকসা গ্রামবাসী সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা ভোগ করলেও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। কারণ প্রধান সড়কের দুই পাশের সরকারি জমিতে যে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে তা কতিপয় প্রভাবশালী, দুষ্ট প্রকৃতির লোকজন অবৈধভাবে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে লোকমান সরদারের বাড়ি থেকে হামিদ সানার বাড়ির পর্যন্ত প্রধান সড়কের পাশে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনার ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই নাকসা গ্রামের অধিকাংশ ঘর বাড়ি বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে। গ্রামের মানুষ জলাবদ্ধতার কারণে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থতায় ভোগে।
এই গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি আলিয়া মাদ্রাসা, আটটি জামে মসজিদ এবং দুইটি হেফজ খানা রয়েছে। সেখানে শত শত শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এ সকল শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম থাকে। বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা বাড়িগুলোর শিক্ষার্থীরা প্রধান সড়কে এসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে পারে না। এই গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাঠদানে পিছিয়ে পড়ার কারণে লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এরূপ অবস্থা বেশিদিন চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
লিখিত অভিযোগকারী মো. হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা গ্রামবাসী জলবদ্ধতার হাত থেকে রেহাই পেতে ইউএনও স্যারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। স্যার আমাদী ভূমি অফিসের নায়েব স্যারকে তদন্ত করা নির্দেশ দিয়েছেন কিন্তু প্রায় পাঁচ মাসের মতো হতে গেছে তিনি এখনো তদন্ত করেননি।
তিনি আরও বলেন, আমার মনে হচ্ছে স্যার কারো কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। তাই তিনি তদন্ত করছেন না।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে আমাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলামের অফিসে গিলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার পাশের রুমে আপনি সহকারী ভূমি কর্মকর্তা পঞ্চানন বাবুর সাথে একটু কথা বলেন। উনি এ বিষয়ে সব কিছু ভালো জানেন।
পরে এ প্রতিবেদক পাশে রুমে গেলে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের স্যার এ বিষয়ে জানে আপনি স্যারের সাথে একটু কথা বলেন। পরবর্তীতে এ প্রতিবেদক ভূমি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের কক্ষে গিলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি যোগদান করার পরে তাহার কোন কাগজ আমি অফিসে পাইনি। পূর্বে যিনি ছিলেন চারুচন্দ্র মন্ডল তার সাথে আমি কথা বলেছি, তিনি ওখানে গিয়েছিলেন কিন্তু বাদী এবং বিবাদী কাউকে পাননি। তবে অভিযোগের বিষয়ে কবে তদন্ত হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সুদত্তর দেননি।
কয়র উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলি বিশ্বাস বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :