হামলা চালিয়ে আদালত চত্বর থেকে দুই আসামি ছিনতাই

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৯:১২ পিএম

হামলা চালিয়ে আদালত চত্বর থেকে দুই আসামি ছিনতাই

ছবি: সংগৃহীত

হামলা চালিয়ে আদালত চত্বর থেকে বাদী পক্ষের লোকজন দুই আসামিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর আদালত প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।  

জানা যায়, জমি সংক্রান্ত একটি মামলায় আগেই অস্থায়ী জামিনে ছিলেন নারী-পুরুষসহ ১৩ জন। স্থায়ী জামিনের জন্য মামলার সব আসামি এদিন সকালে আদালতে হাজির হয়ে ছিলেন। আদালত তাদের স্থায়ী জামিনের আবেদন মঞ্জুরও করেন। এতেই ঘটে বিপত্তি।

 

আগে থেকে আদালত চত্বরে হাতে ধারালো দা, চাপাতি, ছুরি ও লাঠি নিয়ে ওত পেতে থাকে মামলার বাদী। জামিন নিয়ে আদালত থেকে বের হওয়ার পরই আসামিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মামলার বাদী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। পুলিশ, আইনজীবীদের সামনে কোপাতে ও পেটাতে থাকে।

এতে পুরো আদালতপাড়া আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য আসামিরা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অফিস কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেন। দ্বিতীয় দফায় সেখানে গিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে আসামি মিলন মিয়া ও বাবুল মিয়া নামে সহোদর দুই ভাইকে অপহরণ করে নিয়ে যায় মামলার বাদী ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।

এ ঘটনার ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে। সেখানে দেখা যায় পুলিশের দুজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

জানা যায়, জমি সংক্রান্ত ঘটনায় শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী গ্রামের মো. শহীদুল্লার ছেলে এসএম নাজমুল হক গত ৪ জানুয়ারি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় একই এলাকার আব্দুল খালেক ও তার ৩ ছেলেসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে।

গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের বিচারক সেলিনা আক্তার তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ সময় আদালতের বাইরে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে ওত পেতে থাকে মামলার বাদী নাজমুল হক ও তার ভাড়াটে একদল সন্ত্রাসী। আসামিরা বের হওয়ার পরপরই তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কাউকে কোপানো হয়, কাউকে দেওয়া হয় বেদম পিটুনি।’

তিনি বলেন, ‘মিলন মিয়া ও বাবুল মিয়াকে দুপুর ১২টার দিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অজ্ঞাত কোনো স্থানে নিয়ে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। পরে বিকেল ৩টার দিকে আইনজীবী সমিতির ফটকের সামনে অচেতন অবস্থায় দুই ভাইকে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর পুরো আদালত পাড়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।’

 

মামলার প্রধান আসামি এনামুল হক বলেন, ‘জামিন পাওয়ার পর আমরা আদালত থেকে বের হয়ে বাদী নাজমুল ও তার লোকজনকে দেখতে পাই। তাদের প্রত্যেকের হাতেই ছিল দেশিয় অস্ত্র। হামলায় আমরা ১৩ জনই আহত হয়েছি। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রত্যেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছি। আইনজীবী সমিতির অফিসের কর্মচারী আইয়ুব আলীর মাথায় কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তার মাথায় সাতটি সেলাই দিতে হয়েছে।’

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ওই সন্ত্রাসীদের ধরতে মাঠে কাজ করছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদেরকে ধরতে না পারলে কেউ নিরাপদ নয়।’

মহানগরের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ‘এ ঘটনার কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই মামলা নেওয়া হবে।’

 

এম/আর

Link copied!