ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

নেশাদ্রব্য খাইয়ে একই পরিবারের ১২ জনকে অচেতন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ১০:২১ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক (নেশাদ্রব্য) খাইয়ে একই বাড়ির তিন পরিবারের ৪ শিশু ও নারী-পুরুষসহ অন্তত ১২ জনকে অচেতন করার খবর পাওয়া গেছে। অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে ৯ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান মির্দার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা হলেন- মো. শাহজাহান মির্দা (৭০), নুর ভানু (৬৫), পান্না আক্তার (২৭), আকলিমা বেগম (২০), আরমান হোসেন (১০), ইমরান হোসেন (৪), নুসরাত (৪), মরিয়ম (৪), পলি আক্তার (১৬), পিংকি বেগম (২৫) ও মো. নিশান (২৮)।



অচেতনদের মধ্যে জ্ঞান ফিরে আসা পলি আক্তার জানান, প্রতিদিনের মতো রান্না-বান্না শেষ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে পরিবারের সবাই মিলে মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশী এক বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে যান তারা। এরপর ফিরে এসে রান্না করা হাঁসের মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় দুই শিশু বমি করলেও বিষয়টি অনুমান করতে পারেননি তারা। পরে জ্ঞান ফিরে দেখেন তিনি হাসপাতালে।

ভুক্তভোগী শাহজাহান মির্দার ভাতিজা মো. কামরুল ইসলাম জানান, বিয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার পর কোনো এক ফাঁকে দুর্বৃত্তরা রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে রাখে। পরে ওই খাবার খেয়ে বাড়ির তিনটি পরিবারের ১২ জন সদস্য অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় পরিবারের অপর সদস্যরা রাতে বাড়ি ফিরে একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে সবাইকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র লুট বা চুরির বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

আবুবকর ছিদ্দিক, নুরুন্নবী ও সালেহা বেগমসহ স্থানীয় কয়েকজন জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খাবারের সঙ্গে নেশা মেশানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। খাবারের পরই সবাই আস্তে আস্তে অচেতন হয়ে পড়েন। যে একজন সুস্থ আছেন তিনি রাতের খাবার খুবই কম খেয়েছেন। সে কারণে তিনি পুরোপুরি অচেতন হননি।

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সোহেল রানা জানান, অচেতন অবস্থায় নিয়ে আসা শিশুসহ ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অসুস্থদের খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়েছে।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।