জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও উচ্ছেদ প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম

জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও উচ্ছেদ প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নড়াইলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে উচ্ছেদ প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক কর্তৃক উচ্ছেদ নেটিশের ভুক্তভোগী পরিবারের আয়োজনে নড়াইল পুরাতন বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নড়াইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের  ইমাম ম. ম. শফিউল্লাহ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। নড়াইল পৌরসভা মহিষখোলা মৌজার দক্ষিণ পার্শ্বে চিত্রা নদী প্রবাহিত। নদীর চর পড়ে থাকা জায়গা দীর্ঘ ৫০ বৎসর পূর্ব থেকে  মহকুমা প্রশাসক ও পরবর্তী জেলা প্রশাসক অকৃষি খাস জমি হিসাবে বন্দোবস্ত করে আসছে। আমরা নিজ নিজ ইজারাকৃত জমিতে গৃহ নির্মাণ করিয়া পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি।

১৯৯৩ সালে পৌর এলাকার খাস/অকৃষি জমি স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমরা স্থায়ী বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের  নিকট আবেদন করি। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৭/০৭/৯৬ তারিখে জমির বাটা দাগ করে, প্লট সৃষ্টি করে এবং দাগ নং বসিয়ে স্থায়ী ইজারা দেওয়ার প্রস্তাবনা বিভাগীয় কমিশনারের নিকট প্রেরণ করেন। মহিষখোলা মৌজায় জরিপকালে আমাদেরকে মহিষখোলা মৌজায় অন্তর্ভুক্ত করে মাঠ পর্চা ও ৩০ ধারা অনুমোদিত হয়।

তিনি আরো বলেন, স্থায়ী বন্দোবস্ত দরখাস্তকারীগনের মধ্য হতে কয়েকজনকে জেলা প্রশাসক দাতা হয়ে মুল্য নির্ধারণের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে দেন। বাকি ফাইলগুলি প্রক্রিয়াধীন আছে। গত ০১/১১ সালে ঘর বাড়ি অপসারণের নোটিশ প্রদান করলে আমরা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হই। হাইকোর্ট কাগজপত্র বিবেচনা করিয়া ৬০ দিনের মধ্যে উক্ত জমি স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন।

উক্ত হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক পুনরায় স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে ২৯/০১/২৫ তারিখ জেলা প্রশাসক উক্ত খাস/ অকৃষি জমিকে নদীর শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করে আমাদের উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করেছেন। অতীব দুঃখ ও হতাশা গ্রন্থ হইয়া আমরা আপনাদেরকে জ্ঞাত করিতেছি যে, উক্ত জমি জেলা প্রশাসক কর্তৃক অকৃষি খাস জমি পরচা দাগ সৃষ্ট করে প্লট হিসাবে ইজারা দিয়েছেন এবং কিছু জমি দাতা হিসাবে বিক্রয় করিয়া দিয়েছেন কিন্তু আজ ৫০ বৎসর পর উক্ত জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে আমাদেরকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছেন। আমাদের এই জমি ছাড়া অন্য কোথাও কোন ভূমি নাই। আজ ৫০ বৎসর পর জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে আমাদের বিতাড়িত করলে তা হবে আত্মঘাতী বৈষম্যমুলক সিদ্ধান্ত। আমরা কোনো অবৈধভাবে নদীর জায়গায় দখল করি নাই।

জেলা প্রশাসক আমাদেরকে সরকারি বিধি মোতাবেক অকৃষি ও খাস জমি ইজারা দিয়েছেন। যাতে আমরা আমাদের জীবনের তিলে তিলে অর্জিত অর্থ দিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে ৫০ বৎসর যাবত বসবাস করিতেছি। আমাদের কে উচ্ছেদ করলে আমাদের খোলা রাস্তায় বা গাছের তলায় পরিবার নিয়ে থাকতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও  পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অশোক কুন্ডু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তবিবর রহমান খান, খন্দকার আল মাসুদ হাসান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, মোজাহিদুর রহমান পলাশ, নড়াইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. আফানুর রহমানসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যবৃন্দ।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে ৷ এ জমি সরকারি খাস জমি। উচ্ছেদের জন্য যাদের নোটিশ করা হয়েছে। তাদের কখনও বন্ধবস্ত দেওয়া হয়নি।

আরবি/জেডআর

Link copied!