রমজান মাসে বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কৃত্রিম সংকটসহ নানা সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তবে এবার আগেই বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আক্কেলপুর উপজেলা প্রশাসন তৎপর।
শনিবার (১ মার্চ) জয়পুরহাটের আক্কেলপুর কলেজ বাজারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিং অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
অভিযানে দোকানে মূল্য তালিকা সংরক্ষণ না করা, অপরিষ্কার পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি এবং বাজারের সার্বিক শৃঙ্খলা বিঘ্ন সৃষ্টি না করার লক্ষে প্রশাসনের সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. মুনিরা সুলতানা।
ভুক্তভোগীরা জানান, অনেক দোকানে এখনো মূল্য তালিকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। মাছ, মাংস, তেল, মসলা, খোলা চিনি ও কাঁচা বাজারে ব্যাপক মূল্য পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের মজুদ বাড়িয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার চেষ্টা করছে। অপরিষ্কার পরিবেশে খাবার বিক্রি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
অভিযানের সময় অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের ভুল স্বীকার করলেও, কেউ কেউ নানা অজুহাত দাঁড় করিয়েছেন।
এক মুরগী বিক্রেতা বলেন, ‘মূল্য তালিকা ছিল এখন নেই, তবে সামনে রেখে দেব।’
আরেকজন বলেন, ‘আমরা নিজেরাই বেশি দামে পণ্য কিনছি, তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’
এদিকে, স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি প্রশাসনের অভিযানের পর নড়েচড়ে বসেছে।
আক্কেলপুর কলেজ বাজার বনিক সমিতির সভাপতি কাজী শফি উদ্দীন বলেন, ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে প্রচার-প্রচারণা চালানো এবং বাজারের শৃঙ্খলা রক্ষায় সমিতির পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাধারণ ক্রেতারা প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাজার করতে আসা সবুজ নামে এক ভোক্তা বলেন, ‘রমজানের সময় সবকিছুর দাম অযৌক্তিকভাবে বেড়ে যায়। প্রশাসনের এই অভিযান নিয়মিত হওয়া দরকার। একদিনের অভিযান কোনো পরিবর্তন হবে না।’
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. মুনিরা সুলতানা বলেন, ‘রমজান এলে সাধারণ মানুষকে ঠকানোর প্রবণতা বাড়ে। কিন্তু এবার প্রশাসন আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে। বাজার পরিদর্শনে দেখা যায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ একদম নেই বললেই চলে। দুই একটা দোকানে দুই এক বোতলজাত সয়াবিন তেল দেখা যায়। তবে খোলা সয়াবিন তেল পর্যপ্ত পরিমাণ রয়েছে। দোকানিদের দাবি বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ পাচ্ছেন না। কোম্পানির মালিকরা সরবরাহ করছেন না। এছাড়া ব্রয়লার ও অন্যান্য মুরগির দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা একদিনের অভিযান নয়। জনগণের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে যাতে দ্রব্যমূল্য না চলে যায়, সেই জন্য পুরো রমজানজুড়ে বাজার মনিটরিং চলবে। প্রতিটি দোকানে নিয়ম মানার বাধ্যবাধকতা আছে। যদি কেউ আইনের তোয়াক্কা না করে, তাহলে কেবল জরিমানা নয়, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :