শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লিয়াকত হোসাইন, মতলব উত্তর, চাঁদপুর

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম

অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে ৮ পণ্য কেনা বাধ্যতামূলক!

লিয়াকত হোসাইন, মতলব উত্তর, চাঁদপুর

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম

অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে ৮ পণ্য কেনা বাধ্যতামূলক!

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট। তেল না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনছেন।

এমন সংকটের জন্য বোতলজাত সয়াবিন তেলের ডিলার এবং কোম্পানিকে দোষারোপ করছেন  দোকানি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, তেলের সঙ্গে একই কোম্পানির সরিষার তৈল, লবন, চা পাতা, সেমাই, ট্যাংক, পোলাও চাল, সুজি, হলুদ ও মসলা না নিলে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। কোম্পানিগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের যেসব পণ্যের চাহিদা বাজারে নেই, সেসব পণ্য না রাখলে তেল দিচ্ছেন না। এমনকি সয়াবিন তেল বিক্রিতে কোনো ধরনের মুনাফা দিতেও রাজি নন তারা। এ জন্য দোকানে তেল রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ শনিবার (১ মার্চ) উপজেলার ছেংগারচর বাজার এবং বিভিন্ন বাজারের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। যারাই তেল কিনতে আসছেন, দোকানিরা বলছেন নেই। ছয়-সাতটি দোকান ঘুরেও তেল পাননি অনেকে। তাদের প্রশ্ন, তেলের কি সংকট চলছে?

অনেকে বড় দোকানে তেল না পেয়ে পাড়া-মহল্লার দোকানে যান। একই অবস্থা দেখে দোকানির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান ক্রেতারা। এমন এক ক্রেতাকে উদ্দেশ্য করে তখন দোকানি বলেছেন, কোম্পানিগুলোর বেঁধে দেওয়া শর্তে রাজি না হওয়ায় তেল দিচ্ছে না। এজন্য দোকানে তেল নেই। 

তেল না পেয়ে ভোগান্তির কথা জানিয়ে ছেংগারচর পৌর এলাকার বলুরচর গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অন্তত ছয়টি দোকান ঘুরেছি। কোনও দোকানে তেল নেই। সবাই বলছেন, নেই-নেই। এটা তো আমাদের জন্য ভোগান্তি। দোকানিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ কারও দোকানেই তেল নেই। শুধু ছেংগারচর বাজারে নয় উপজেলা সব বাজারের দোকানগুলোতে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে অনেক ক্রেতা মনে করছেন, সংকট। তবে বাস্তবে কোম্পানির বেঁধে দেওয়া শর্তের কারণে তেল রাখছেন না দোকানিরা।

জোরখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, ‌আমাদের উপজেলার খুচরা ও পাইকারি দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। সংকট মনে করে আমরা খোলা তেল কিনছি। পরে শুনেছি, সংকট নেই। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা শর্ত মেনে তেল বিক্রি করছেন। ওই শর্তে তেল কিনলে খুচরা বিক্রেতাদের লাভ হয় না। এজন্য তারা কোনও কোম্পানির তেল দোকানে রাখছেন না।

দোকানে তেল নেই কেন জানতে চাইলে ছেংগারচর বাজারের পাইকারি দোকানি মো. জিয়া ও মো. অপু মিয়া বলেন, তেল রাখতে চাইলে সঙ্গে তাদের কোম্পানির সরিষার তৈল, লবন, চা পাতি, সেমাই, ট্যাংক, পোলাও চাল, সুজি, হলুদ ও মসলা রাখার শর্ত দিচ্ছেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। আবার যত টাকার তেল রাখবো, তত পরিমাণ টাকার চাহিদাহীন পণ্য রাখা বাধ্যতামূলক বলে দিচ্ছেন তারা। এরপর তেলের বোতলের গায়ে যে দাম লেখা, সেই দামে বিক্রি করতে হবে। তাও মানতে রাজি ছিলাম। কিন্তু যেসব পণ্যের ক্রেতা নেই, সেসব পণ্য রাখলে আমাদের তো লোকসান হবে। লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উল্টো তেল রেখে বাড়তি চাপে পড়তে হচ্ছে। এর চেয়ে বরং ওই টাকার অন্য পণ্য দোকানে রাখলে কিছুটা হলেও লাভ হবে। এজন্য তেল রাখছি না।

একই কথা বলেছেন এই বাজারের খুচরা দোকানি রসুল মিয়াজী বলেন, এক কোম্পানির তেল রাখতে চাইলে সঙ্গে তাদের ৮টি আইটেম নেওয়া বাধ্যতামূলক। অন্য কোম্পানির এক কার্টন সয়াবিন তেল রাখতে হলে এক তাদের কার্টন সরিষার তেলসহ বিভিন্ন পণ্য রাখা বাধ্যতামূলক। আরেক কোম্পানি তাদের পোলাওয়ের চাল-ডাল এবং মিনিকেট চাল রাখার শর্ত দিচ্ছে। এই কারণে বোতলজাত সয়াবিন তেল দোকানে তোলা বন্ধ করে দিয়েছি আমরা।

বোতলের গায়ে লেখা দামে তেল বিক্রি করতে আমরা রাজি উল্লেখ্য করে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, কারণ মাসিক যারা ক্রেতা আছেন, তাদের সব মালামাল দিতে হয়। তা না হলে প্রতিযোগিতার বাজারে অন্য দোকানে চলে গেলে ক্রেতা হারাতে হয়। ফলে তেল বিক্রিতে লাভ না থাকলেও আমরা রাখতাম। কিন্তু এখন যেসব শর্ত দিচ্ছে কোম্পানিগুলো, তা কোনোভাবেই মানা সম্ভব না হওয়ায় তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছি।

চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান জনান, আমরা ইতিমধ্যেই চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করতেছি। সয়াবিন তেলের সাথে অন্যান্য পন্য বাধ্যতামূলক দেওয়া এটি নিয়ম বহির্ভূত কাজ, যারা এই কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি জানান, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!