ঝিনাইদহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট, সবজির দাম চড়া

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম

ঝিনাইদহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট, সবজির দাম চড়া

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মাহে রমজানের প্রথম দিনেই ঝিনাইদহের বাজারগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে মিলছে না বোতলজাত ১ লিটার, ২ লিটার ও ৫ লাটার সয়াবিন তেল। তবে খোলা তেলের সরবরাহ রয়েছে স্বাভাবিক। বোতলজাত সয়াবিন তেলের বিকল্প হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত পাম অয়েল। ব্যবসায়ীরা দাবি করছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো। এদিকে রবিবার ঝিনাইদহ জেলা শহরের সাপ্তাহিক হাটের দিন ছিল। রোজার প্রথম দিন হওয়ায় সব কিছুর চাহিদা বেশী। এ বাড়তি চাহিদার সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী শসা, বেগুন ও লেবু চড়া দামে বিক্রি করছে এমন বিষয় লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতি কেজি বেগুন প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা যা দু দিন আগে ছিল ২৫-৩০ টাকা। প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা যা আগে ছিলো ২০-২৫ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা যা আগে ছিল ২৫-৩০ টাকা, টমেটো ২০-২৫ টাকা যা আগে ছিলো ১০-১৫ টাকা, শিম ২০-২৫ টাকা যা আগে ছিলো ১৫-২০ টাকা, গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা যা আগে ছিলো ৩০-৩৫ টাকা। প্রতি পিছ লাউ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০-৫০ যা আগে ছিলো ৩০-৩৫ টাকা। ধনিয়া পাতা ১০০ টাকা কেজি, প্রতি আঁটি লালশাক ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা যা আগে প্রায় অর্ধেক ছিলো ‌। এছাড়াও অন্যান্য সব ধরনের সবজিরই দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিং না থাকায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। সেই সঙ্গে তাঁরা তাঁদের ইচ্ছেমত দাম বাড়াচ্ছে নানা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের। সরেজমিনে জেলা শহরের নতুন হাটখোলা বাজার, গোয়ালপাড়া বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিন আগেও ১ লিটার ও ২ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে পাওয়া যেত। কিন্তু রোজার প্রথম দিনে হঠাৎ করেই বাজার থেকে বোতলজাত তেল উধাও হয়ে গেছে। তবে খোলা সয়াবিন তেল ও পামওয়েল পাওয়া যাচ্ছে।

বাজার করতে আশা মাসুদ নামের এক ক্রেতা বলেন, চাকরি করি, সব সময় বাজার করার সময় হয় না। সে জন্য পুরো মাসের বাজার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাজারে কোনো বোতলজাত সয়াবিন বোতল নেই। সবই খোলা তেল। তাই বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনতে হচ্ছে। এর পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজি থাকতে পারে। তিনি আরো বলেন, দুদিন আগেও সকল প্রকাশ সবজির দাম কম ছিল আজ রোজার প্রথম দিন হঠাৎ করেই সবজির দাম বেড়ে গেছে। বাজার করতে আসা রিপন নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, রোজার প্রথম দিনে বাজারে এসে দেখি সব জিনিসের দামেই আগুন। শুক্রবার যে বেগুন কিনেছিলাম ৩০ টাকা। আজ সে বেগুনের দাম ৬০ টাকা কেজি। ১ হালি লেবুর দাম ছিল ২৫-৩০ টাকা সে লেবুর হালি আজ ৫০ টাকা। ধনিয়া পাতা, গাজর, শসার দামও বেড়েছে। তিনি বলেন বাজারে সরকারের কোনো মনিটরিং নেই। শুধু টেবিলের বৈঠকেই তাদের বাজার মনিটরিং করার আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকে।
এদিকে ভোজ্যতেলের সংকটের বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী মো. দেলোয়ার হোসেন বলছেন, বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। নতুন কোনো বোতলজাত তেল আসেনি। যে কারণে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণ, পণ্যের মান নিশ্চয়ণসহ সার্বিক বাজার তদারকি আমাদের নিয়মিত একটি কার্যক্রম। আমরা প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রাখবো। এবিষয়ে প্রতি বছরের ন্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

আরবি/এস

Link copied!