ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা ধজনগর গ্রামের মৃত রোশন আলীর মেয়ে জ্যোতি আক্তার (২০) ও স্মৃৃতি আক্তারকে (১৪) হত্যার অভিযোগ উঠেছে বড় বোন জ্যোতির স্বামী মো. সামিউলের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত সামিউল ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন মিল শ্রমিক। নিহত ছোটবোন স্মৃৃতি আক্তার জয়নগর লিয়াকত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে নিহতদের ছোটভাই জাহিদের চিৎকার শোনে আশপাশের লোকজন এসে দেখে জ্যোতি ও স্মৃতির মরদেহ বিছানায় পরে আছে। এরপর আশপাশের লোকজন মিলে কসবা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতদের ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া জাহিদ জানায়, গতকাল আমার বোন জামাই ও আমার দুই বোনসহ আমি ইফতারি করেছি ও রাত্রে খাওয়ার পর শুয়ে ছিলাম। প্রতিদিন আমার বোন স্মৃৃতি ও আমি একসাথে ঘুমালেও গতকাল রাতে আমার বোন জামাই আমাকে আলাদা রুমে তার সাথে ঘুমোতে বলে, তখন রাত আনুমানিক ১১-১২টা হবে।
এরপর সেহরির সময় আমার বোন জামাই জানায় যে, আমার বোনেরা রোজা রাখবে না। পরে আমি শুয়ে পরলে সকালে উঠে দেখি ঘরের পেছনের দরজা খোলা ও আমার বোনজামাই নাই ও আমাদের ঘরে থাকা স্বর্ণ ও মোবাইল ফোনও নাই। তখন আমার বোনদের ডাকতে গেলে তারা না উঠায় আমি আশপাশের লোকদের ডেকে আনি।
নিহতদের মামাতো ভাই পাশের গ্রামের বাসিন্দা মহসিন জানায়, জ্যোতি ও স্মৃৃতি আপন বোন ও এরা আমার মামাতো বোন হয়, জ্যোতির স্বামী সামিউল গত এক সপ্তাহ ধরে আমার মামার বাড়িতে থাকতেছে। আজ সকালে ফোন পেয়ে এসে দেখি আমার মামাতো বোনদের হত্যা করা হয়েছে। আমার ধারণা, জ্যোতির স্বামীই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যার জন্যই সে পালিয়ে গেছে।
নিহতদের পাশের বাড়ির বাসিন্দা জিয়াউর রহমান জানায়, নিহত জ্যোতি ও স্মৃতি সম্পর্কে আমার ভাতিজি লাগে, সকালে তাদের ছোট ভাইয়ের চিৎকার শোনে আমরা এসে দেখি তাদের লাশ পরে আছে ও গতকাল জ্যোতির জামাই সামিউল তাদের ঘরে ছিল। তবে এখন সে পলাতক। তাই আমাদের ধারণা জ্যোতির জামাই তাদের হত্যা করেছে।
স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নারগিস আক্তার জানায়, ঘটনাটি জানাজানি হলে আমরা ঘটনাস্থলে এসে দুই বোনের লাশ দেখতে পাই ও তাদের ছোট ভাইয়ের থেকে জানতে পারি যে, তার বোনজামাই সামিউল তার বোনদের হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের ফাঁসির দাবি করছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, আপন দুই বোনকে হত্যার খবর পেয়ে সরেজমিনে এসে লাশ উদ্ধার করেছি ও ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছি। তবে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই জানা যাবে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আপনার মতামত লিখুন :