টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় বেগুনের বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এদিকে রমজানের শুরুতে বেগুনের বাজার দর দ্বিগুন বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। অপরদিকে রমজানে বেগুনের চাহিদা বেশি থাকায় নিরুপায় হয়ে সাধ্যমতো চড়া দামেই বেগুন ক্রয় করছেন কিছুসংখ্যক সুবিধাভোগী ক্রেতা।
রমজানে ইফতারে বেগুন দিয়ে বেগুনি তৈরি করার ফলে এ মাসে বেগুনের চাহিদাটা অন্যান্য সময়ের থেকে বেশি দেখা যায়। জাত ও আকারভেদে বাজারে বেগুন পৃথক মূল্যে বিক্রি করছেন কৃষক ও খুচরা বিক্রেতারা।
রমজানের আগে যে বেগুনের পায়কারি প্রতি মণ ছি সাতশ টাকা তা বর্তমানে রমজানের সময় চাহিদা বাড়ায় কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৬শ থেকে ২ হাজার টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। পরিবহন ও বিভিন্ন খ্যাতে খরচ করে বেগুন অন্যত্র পাঠিয়ে কোনোমতে পুঁজি পাচ্ছেন বলে জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (৩ মার্চ) ধনবাড়ী বাজার ও উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, আকার ও জাত ভেদে বেগুনের মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রি করছেন কৃষক ও পাইকাররা। বাজারগুলোতে লম্বা বেগুন ও গোল (ডোফা) জাতের বেগুন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে লম্বা বেগুনের খুচরা কেজি ৬০-৮০ টাকা।
পাইকারি বিক্রেতা জালাল হোসেন জানান, তিনি এবার লম্বা বেগুন প্রতি মণ ১ হাজার ৮শ টাকায় এবং গোল (ডোফা জাত) বেগুন প্রতি মণ ১ হাজার ৫শ থেকে ৬শ টাকায় ক্রয় করেছেন। কৃষকরা বাজারে বেগুন নিয়ে আসলে সরাসরি কৃষকদের গাড়ি থেকে বেগুন ক্রয় করছেন তারা।
তিনি আরও জানান, রমজানের আগে লম্বা বেগুনগুলো প্রতি মণ পাইকারি দর ছিল ৬শ টাকা। রমজান আসায় বাজারে এর দাম বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬শ থেকে ৮শ টাকা মণ। ক্রয়কৃত বেগুনগুলো তিনি ঢাকার বাজারে সাপ্লাই দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। বেগুনগুলো ঢাকায় পাঠাতে পরিবহন ও লেবার খরচসহ তাদের প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা খরচ হয় এবং সব মিলিয়ে বাজারে বেগুনের চাহিদা থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
ধনবাড়ী উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়নের কৃষক সোহেল বলেন, তিনি এবার ৩ পাখি জমিতে বেগুনের চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয় আনুমানিক ৩ লাখ টাকা । খরচ বাদে ২ লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। বাজারে লম্বা বেগুন ১ হাজার ৬শ থেকে ৮শ টাকা এবং গোল বেগুন ১ হাজার ৪শ টাকায় বিক্রয় করতে হচ্ছে। রমজানে বেগুনের চাহিদা থাকায় প্রতি মণে ৬-৭শ টাকা বেড়েছে।
ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, উপজেলায় চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪৮ হেক্টর জমিতে শিংনাথ, ঝুমকো, ইসলামপুরী, বিভিন্ন স্থানীয় জাতের বেগুন চাষ হয়েছে। কৃষি উপ-সহকারীদের মাঠ বিজিদের কারণ এবং কৃষকদের অত্যাধিক আগ্রহের ও ভালো মুনাফা পাওয়ায় বেগুন চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করি এ আগ্রহ ভবিষ্যতেও থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :