ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫

‘বাঘ নয়, বনদস্যুদের ভয়ে বনে যাই না’

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

১৬ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে সুন্দরবনে যেতেন মুজিবর গাজী। বয়স যখন ২০ শেখেন সংসার পরিচালনার জন্য সবই। বাদাইয়ের জন্য বারবার বনে গেলেও,  ৫ আগস্টের পর জিম্মি করে টাকা আদায়ের দাবির জন্য, বনদস্যুদের ভয়ে আর যেতে পারেন না তিনি।

বর্তমানে তার বয়স ৬০। এই দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় জীবিকার সন্ধানে বনে গিয়ে বাঘের থাবায় সঙ্গীদের জীবন দিতে দেখেছেন। নিজেও বাঘের মুখে পড়েছেন, বারবারই বেঁচে ফিরেছিলেন সাহসের জোরে। এরপরও সুন্দরবনে যাওয়া বন্ধ করেননি। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর থেকে আর বনে যাচ্ছেন না তিনি। বাঘের ভয়ে নয়, মূলত বনদস্যুদের হাতে মার খাওয়ার শক্তি এখন নেই তার ই জন্য বনে যান না।

মুজিবর গাজীর অভিযোগ, ৫ আগস্ট সাতক্ষীরার জেল ভেঙে সাতক্ষীরা ও শ্যামনগর থানা লুট করে অস্ত্রপাতি নিয়ে সব ডাকাতারা সুন্দরবনে এসেছে। তারা খুব অত্যাচার করছে। এই ভয়ে কয়েক পুরুষের পেশা বাদায় যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে।

তিনি বলেন, ‘বাদায় আমাগো জীবন। বাদা ছাড়া অন্যকিছু চিন্তায় আসে না। বাপ দাদা সব বাদা করে জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। আমার বয়স ৬০। ইচ্ছা থাকলেও এখন আর বাদায় যেতে পারিনে। ভয় করে। বাদায় প্রায় বাঘ দেখা যাচ্ছে। আর বনদস্যুদের উৎপাতও বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বনদস্যুরা এক জেলেকে জিম্মি করে টাকা দাবি করছে। টাকা দিতে দেরি হলে মারপিট করে। দুই লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে তারা। বয়স হওয়ায় এখন আগের মতো দৃষ্টি নেই। বনদুস্যরা ধরলে মারপিট করবে, টাকা দিতে হবে। বাঘের ভয় না পেলেও বনদস্যুদের ভয়ে এখন আর বনে যাই না।’