নারী হাজতখানায় সেই তুফানের সাথে পরিবারের সাক্ষাত : এটিএসআই প্রত্যাহার

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম

নারী হাজতখানায় সেই তুফানের সাথে পরিবারের সাক্ষাত : এটিএসআই প্রত্যাহার

ফাইল ছবি

বগুড়ার আলোচিত ও সাবেক শ্রমিকলীগ নেতা তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের ৫ সদস্যের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায়  আদালত পুলিশের সহকারি টাউন উপ পরিদর্শক ( এটিএসআই) জয়নাল আবেদিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার( ৩ মার্চ) বিকেলে বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে। তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারন সস্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে এবং হত্যা, মাদক, ধর্ষন, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামী। 

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় দেখা যায়, নারী হাজত খানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়া। ভিতরে তুফান সরকার,তার স্ত্রী, ছোট বোন, শ্বাশুড়ি,স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবি সহকারী। ঘটনাটি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈচৈ পড়ে যায়। পরে তাড়াহুড়া করে তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয় এবং তার পরিবারের সদস্যরা সটকে পড়েন।

বগুড়ার আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন,সোমবার  সকালে  তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। দুপুরের মধ্যেই কারাগার থেকে আনা সকল হাজতিকে প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। হাজত খানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে।  তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সাথে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগচোরে ঘটনাটি ঘটে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ) মোঃ রায়হান জানান, আদালতে হাজত খানার ঘটনায় তদন্ত করে দুষিতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা  বলেন, পুরুষ আসামীকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরো যাদের গাফিলতির প্রমান পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষন করে তুফান সরকার। পরে শালিস ডেকে ধর্ষিতা ও তার মা‍‍`কে চরিত্রহীনা উল্লেখ করে তাদের মারধর করে  এবং মা- মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার।সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় একজন দর্শনার্থীর মাধ্যমে স্যালাইন পাইপ দিয়ে ফেন্সিডিল সেবন করতে গিয়ে কারারক্ষিদের হাতে ধরা পড়ে সেই দর্শনার্থী।সেই ঘটনাতেও আলোচনায় আসে তুফান সরকার। তুফান সরকারের নামে ১৭ টি মামলা রয়েছে।পাঁচ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত অক্টোবর মাসে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

আরবি/এস

Link copied!