রংপুরের মিঠাপুকুরে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২ মার্চ) বিকেলে উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ির কাগজিপাড়ায় ওই সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা চালায় বিএনপিতে পদ পাওয়া যুবলীগের দুই নেতার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা।
পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ছোট ভাই খন্দকার রেদোয়ানুল ইসলাম বাদি হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দীক অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার ‘মিঠাপুকুরে বিএনপির কমিটিতে যুবলীগ নেতা’ শিরোনামে একটি সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর জেরেই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নে সদ্য অনুমোদিত ২নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে ওই ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি রওজার হোসেন শয়নকে যুগ্ম সম্পাদক ও বিগত নির্বাচনের সময়ে আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি করা ক্যাডার গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ কর্মী ইদ্রিস আলী লায়নকে ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। অভিযোগ রয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে গত ১ মার্চ ‘মিঠাপুকুরে বিএনপির কমিটিতে যুবলীগ নেতা’ এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই সদ্য বিএনপিতে যোগদান করা যুবলীগ নেতা শয়ন ও লায়ন সংবাদ প্রকাশকারী সাংবাদিকের ওপর বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ধামকি দিতে থাকে।
এরই জেরে রোববার বিকেল ৪ টার সময় সদ্য কমিটি পাওয়া বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী লায়নের ভাগনে মোকছেদুল, মোকলেছুর,মোকতারুল ইসলাম, আকতার হোসেন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে দৈনিক আমাদের সময়ের রংপুর প্রতিনিধি খন্দকার রাকিবুল ইসলামের বসতভিটার সীমানা সংলগ্ন একটি কাঁঠাল গাছ কাটতে থাকে।
এতে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ছোট ভাই খন্দকার রেদোয়ানুল ইসলাম বাধা দিলে তাকে বেধড়ক মারধর করে।
স্থানীয়রা আহত রেদোয়ানুল ইসলামকে উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক খন্দকার রাকিবুল ইসলাম জানান, গত এক যুগ আওয়ামী ক্যাডার পরিচয়ে ভাংনী ইউনিয়ন এলাকার ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বিএনপিতে পদ পাওয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। পরে ওই ক্যাডারের ভাগনে আমার পরিবারের ওপর হামলা চালায়। হামলা চালানোর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই দেশে সংবাদকর্মীরাই যদি নিরাপত্তা না পায় তাহলে প্রশাসন সাধারণ মানুষকে কীভাবে নিরাপত্তা দিবে।
মিঠাপুকুর থানা পুলিশের এএসআই মো. মিঠুন জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক পরিবারকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছি।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দীক জানান, গণ্ডগোলের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছিলাম। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ছোট ভাই বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।