ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫

সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে পেটালেন সেক্রেটারি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম
মারধরের শিকার মো. হাসান মুরাদ

জুমার খুতবায় সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় মসজিদের ইমামকে মাইকের স্ট্যান্ড দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউনিয়ন সদস্য ওই ইমামকে মারধর করেন। এই ঘটনায় স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বানিয়াচং গ্রামের খন্দকার বাড়ির জামে মসজিদের হুজরা খানায় ঘটে। এদিকে, ঘটনার পর ইমামের সমর্থকরা প্রতিশোধ হিসেবে কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করেন।

আহত ইমাম মো. হাসান মুরাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার দড়িকান্দি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই মসজিদের ইমাম হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অভিযুক্তরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত মোহর আলীর ছেলে মো. নূরুল ইসলাম ও জাকির হোসেন। নূরুল ইসলাম ওই মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অন্যদিকে জাকির হোসেন খোববাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ওই মসজিদের ইমাম শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবায় সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা মিলে ইমামকে তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন দুপুরে মসজিদ সংলগ্ন কক্ষে অবস্থান করছিলেন ইমাম। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও তার ভাইকে নিয়ে ইমামের ওপর হামলা করেন তিনি। মসজিদের মাইকের স্ট্যান্ড দিয়ে ইমামকে মারধর করা হয়।

এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় ইমামের ওপর হামলাকারী দুই শিক্ষক এবং ইউপি মেম্বারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িঘর ভাঙচুর করেনি বলে জানা গেছে।

ইমাম মো. হাসান মুরাদ বলেন, ‘আমি সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলি। আর এটাকে কোনোভাবেই মানতে পারছেন না হাতে গোনা কয়েকজন। আমি তাদের অনুরোধ করে বলেছি, আমি রমজান মাস থেকে নিজেই চলে যাব। কিন্তু তারা আমাকে মারধর করে কক্ষে থাকা ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যান।’

এ ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ইমামকে এলাকার বেশকিছু মানুষ ভালোভাবে গ্রহণ করছে না। মুসল্লিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। শনিবার তাকে আমরা বুঝিয়ে বিদায় করতে গেলে তিনি আমার চোখে আঘাত করেন।’

চান্দিনা থানার ওসি মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘ইমামকে মারধরের ঘটনার পর এলাকাবাসী কিছু ব্যক্তির বাড়িতে হামলা করেছে। উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন এবং তদন্ত চলছে।’