ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫

৮ আনার পেঁয়াজু বিক্রি করে চলে এনামুলের সংসার

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম
পেঁয়াজু বিক্রেতা এনামুল

বর্তমান সময়ে ৮ আনা মূল্য না থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে এখনো ৮ আনার পেঁয়াজু পাওয়া যায়। এক টাকার কয়েন দিলে দু’টি পেঁয়াজু মিলবে এনামুলে দোকানে। আর এই পেঁয়াজু বিক্রি করেই চলে এনামুলের সংসার । রানীশংকৈল উপজেলার ৮ নং নন্দুয়ার ইউনিয়নের (মীরডাঙ্গী) বাজারে এ দোকানটির অবস্থান।

এলাকাবাসী জানান, বাজারে সব পন্যের দাম বাড়লেও এখনো বাড়েনি এনামুলের মুখরোচক খাবার পেঁয়াজুর দাম। ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকে চার আনায় প্রতিটি পেঁয়াজু বিক্রি করলেও এখন তা আট আনায় বিক্রি করছেন তিনি। পেঁয়াজু বিক্রি করেই যোগান সংসারের খরচ।

এনামুলের পেঁয়াজু নিতে দুপুর থেকেই ভীড় জমায় হাটে আসা বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এই পেঁয়াজু কিতে আপেক্ষায় থাকতে হয় ক্রেতাদের। আট আনার পেঁয়াজু বিক্রির সাথে এখনো তিনি, ৫ টাকা দরে দুধ চা বিক্রি করছেন। বর্তমানে মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে ও নতুনত্ব আনতে দোকানে যোগ করেছেন হাঁস,মুরগির ডিম। যা খেতে রীতিমতো ভীড় জমায় বিভিন্ন এলাকার জনতা। প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই দোকানটি । তবে রমজান মাসে বিকেল থেকেই শুরু করেন বেচা-কেনা।

দেশর মানুষ যেখানে স্মার্টফোন আর টেলিভিশনের প্রতি ঝুকেছে। এখানে যেন সেটির চিত্র ভিন্ন, দোকানে আসা ক্রেতাদের তিনি ১৯শ’ শতাব্দীর রেডিওতে কখনো খবর কখনো নাটক কখনো গান , কখনো’বা গজল শুনিয়ে আকৃষ্ট করেন থাকেন। বসতে দেন বাসের তৈরি মাচায় । তবুও যেন তার দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় । বর্তমানে বাজারের উর্ধ্বগতি হলেও বদলাননি তার ব্যবসায়িক স্বভাব।

হাটে আসা ক্রেতা রাকিব জানান, ১ টাকায় ২টি পেয়াজু পেলাম এখানে। অল্প দামে পেয়ে বাসার জন্যও নিলাম।

অন্য ক্রেতা মাসুদ বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই এই দোকানের পেঁয়াজু খাচ্ছি, অনেক মজাদার এই পেঁয়াজু, বর্তমানে বাজারের উর্ধ্বগতি হলেও তিনি আগের দামেই পেঁয়াজু বিক্রি করছেন। আসলেই এটা একটা ব্যতিক্রম বিষয় ।

এ বিষয়ে এনামুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ১টাকায় ২টি পেঁয়াজু বিক্রি করি। আমার কাছে সব শ্রেণীর মানুষ আসেন। বড় বড় হোটেলে পেঁয়াজু বিক্রি করে ৫ থেকে ১০ টাকা, যা সবার পক্ষে ক্রয় করা সম্ভব নয়। তাই সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বেচাকেনা করার চেষ্টা করি যেন সবাই খেতে পারে। সমাজের অনেক গরীব মানুষ আছে তাদের পকেটে টাকা থাকে না, তারা ভালো মন্দ খেতে পারে না তাদের জন্য আমি এখনো ৮ আনার পেঁয়াজু বিক্রি করি । তাছাড়া আমার বেচাকেনা এমনিতেই প্রচুর হয়, আমি এতেই সন্তুষ্ট।