ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মাথুরাপুর আদর্শ এতিমখানায় ইফতারিতে বেঁচে যাওয়া দুই টুকরো কমলা খাওয়ার কারণে মোহাম্মদ সাগর (১৬) এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে সহকারি শিক্ষক ইমরান হাওলাদার। বুধবার ফজরের নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী রাউতাইল গ্রামের মৃত আনসার মন্ডলের ছেলে মোহাম্মদ সাগর। সে এতিম খানার ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও আবাসিক থেকে পড়াশুনা করে।
মারপিটের বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন সকাল ৮ টার দিকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক ইমরান হাওলাদার পলাতক রয়েছে।
নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর বলেন, দ্বিতীয় রমজানের ইফতারের পর দেখি ২ টুকরো কমলা পড়ে আছে। তখন হেড স্যারের কাছে বিষয়টি বললে স্যার আমাকে বলেন কেউ না আসলে খেয়ে নিও। পরে কেউ না আসলে রাতে আমি কমলার টুকরা খেয়ে নিই।
মঙ্গলবার ফজরের নামাজ শেষে ইমরান স্যার আমাকে বলে তুই চুরি করে কমলা খেয়েছিস। এ কথা বলে দড়ি দিয়ে হাত বেধে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প ও মেহগুনি গাছের ডাল দিয়ে প্রচণ্ড মারপিট করে।
শিক্ষার্থীর মা মোছা. মধুমালা খাতুন জানান, সকালে জানতে পারলাম চুরি করে কমলা খাওয়ার অপরাধে আমার ছেলেকে বেধড়কভাবে পিটিয়েছে ইমরান স্যার। এর আগেও আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে পিটিয়েছিল ইমরান স্যার। তখন কিছু বলিনি আজ আবার ছেলেকে মারলো আমি তার বিচার চাই।
মথুরাপুর আদর্শ এতিমখানার সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, ঐদিন ইফতার শেষে তারাবি নামাজ পড়িয়ে আমি বাড়িতে চলে যাই। তার আগে শিক্ষার্থী সাগর কমলার বিষয়টি আমাকে জানালে আমি তাকে খেয়ে ফেলতে বলি। আজ সকালে ইমরান স্যার তাকে মারপিট করেছে।
এ ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। আমাদের কোন শিক্ষক ইমরান হাওলাদারকে পালাতে সহযোগীতা করেনি। অভিযুক্ত এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সাগরকে মারপিটের বিষয়ে তার মা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিয়োগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :