লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসিফ রেজাকে দ্বিতীয় স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের জারিকারক মাকসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসিফের বিরুদ্ধে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম মুন্নী এ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসিফ নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার ধন্যপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। বাদী মুন্নী লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম মিয়ার মেয়ে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে আসিফ রেজা কমলনগর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি হাজিরহাট ইউনিয়নের গৃহবধূ মুন্নীকে কৃষাণী গ্রুপের সভাপতি নির্বাচিত করেন। এতে গৃহবধূর বাড়িতে তিনি আসা-যাওয়া করতে থাকেন। তিনি ওই গৃহবধূকে মোটরসাইকেল যোগে বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিয়ে যায়। এর মধ্যে তাদের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একপর্যায়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এতে গৃহবধূ তার প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দেন। পরে ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে আসিফ তাকে বিয়ে করেন। মুন্নীকে তিনি লক্ষ্মীপুরের ভাড়া বাসায় রাখতেন। আসিফ বদলি হয়ে যান রায়পুর উপজেলায়। এর মধ্যে আসিফের প্রথম স্ত্রী ঘটনাটি জেনে যান। এতে দুজনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
একপর্যায়ে কোনো উপায় না পেয়ে আসিফ তার প্রথম স্ত্রীর কাছে চলে যান। দ্বিতীয় স্ত্রী মুন্নীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা করেন। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেবেন বলে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে মুন্নী গত ২৮ জানুয়ারি অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আদালত আসিফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ঘটনাটি সমাধান করবে বলে তিনি আদালতের কাছে এক মাসের সময় চান। আদালত তা মঞ্জুর করেন; কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সমঝোতা না হওয়ায় মঙ্গলবার আসিফ আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী মুহাম্মদ মোরশেদ আলম শিপন জানান, যৌতুক মামলায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসিফ রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করছি।
রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে এ ঘটনায় কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। কাগজপত্র পেলে অফিসিয়ালভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।