সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া মরিচ্চাপ নদীর বাঁধে ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আশপাশের অতন্ত পাঁচ গ্রামের মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলাতির কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশাশুনি উপজেলার মধ্য চাপড়ায় মরিচ্চাপ নদী ভাঙছে তো ভাঙছেই। দেখার কেউ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের লোকজন আসছেন, দেখছেন। দিয়ে যাচ্ছেন আশ্বাস। কিন্তু নদীভাঙন প্রতিরোধে নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।
এলাকাবাসী জানান, নিয়ম না মেনে মরিচ্চাপ নদী খনন করায় আশাশুনি উপজেলার মধ্য চাপড়ায় নদী পাড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৮০০ পরিবারের। গত কয়েক দিনে নদীর তীরের ৯০ ফুট জমিসহ চারটি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
তারা আরও জানান, আরও ১০টি বাড়ির আংশিক ভেঙে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মরিচ্চাপ নদীর তীরে থাকা চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান ও শত শত পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। নদী ভাঙনে বাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় কবর স্থানে ঝুপড়ি বেঁধে রয়েছেন তারা। তবে নিয়ম মেনে নদী খনন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
আতঙ্কিত পরিবারের নারীরা জানান, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভয়ে রাত কাটাতে হয় তাদের। নদী ভাঙনে বাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় কবর স্থানে ঝুপড়ি বেঁধে রয়েছেন তারা। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড আর ঠিকাদার টাকা ভাগাভাগি করে খায়। ভেসে যায় নদী পাড়ের অসহায় মানুষগুলো।
চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিমানন্দ কুমার দাশ বলেন, মরিচ্চাপ নদীর তীরে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মসজিদ,মাদ্রাসা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ভাঙন না ঠেকালে স্কুল থাকবে না। লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
আশাশুনি ইউএনও কৃষ্ণা রায় বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো-০২) নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদশন করে ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই একটি গ্রাম তলিয়ে যাবে।