মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলাতে জ্বালানি বাঁশ কাঠের বিকল্প হিসেবে গোবরের লাঠির চটা চাহিদা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে পাটখড়িতে গরুর গোবর পেঁচিয়ে তারপর শুকিয়ে সারা বছর ব্যবহার করা যায় এই চটা। কয়েকটি গ্রামে নারীরা অবসর সময়ে চটা বা ঘুটে তৈরি করছেন।
জানা যায়, জ্বালানি কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে গ্রামের মানুষকে। তা ছাড়া গ্যাস কিনে ব্যবহার করাও সাধ্য নেই অনেকের। এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে গোবর দিয়ে চটার প্রতি ঝুঁকছেন গ্রামের বাসিন্দারা। গরুর গোবরের সঙ্গে তুষ মিশিয়ে শুকনো চিকন ২-৩ ফুট লম্বা লাঠি বা পাটখড়িতে পেঁচিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় এই চটা।
কাঁচা চটাগুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে বা রাস্তার পাশে রোদে দাঁড় করে রাখা হয়। এটি ৪-৫ দিন রোদে শুকানোর পর জ্বালানির উপযোগী হয়। এই শুকনো উপকরণগুলো মজুদ রাখা হয়। ঝড়-বৃষ্টির দিনে প্রয়োজন মতো এগুলো দিয়ে চুলায় রান্না করা যায়।
চমক বিবি জানান, আমরা গ্রামের মানুষ এই চটা তৈরি করি এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে গোবর নিয়ে আসি। এরপরে চটা তৈরি করে শুকিয়ে সারাবছর জ্বালানোর জন্য ব্যবহার করি।
নমিতা রানী দাশ বলেন, সারাদিনে ৩০০ থেকে ৪০০ বানাতে পারি। এই চটা শহরে দেখা যায় না, শহরের মানুষ গ্যাস ব্যবহার করে। গ্রামের লোকজন চটা দিয়ে রান্নাবান্না করি।
মৌলভীবাজার পরিবেশ কর্মী আ স ম সালেহ সোহেল বলেন, আমাদের গ্রাম অঞ্চলে আগের মায়েরা গোবর দিয়ে জ্বালানি তৈরি করতেন। তবে এখন এটা খুব কম দেখা যায়, বলতে গেলে হারিয়ে যাচ্ছে। যেভাবে গাছ কাটা হচ্ছে এবং বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে গ্যাসের উপরে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই চটার ব্যবহারে কমবে।
মৌলভীবাজার অধিদপ্তর কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, গ্রাম অঞ্চলে গরুর গোবর দিয়ে এক ধরনের চটা দিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চটা বিক্রি করে অনেকেই জীবিকা জীবিকা নির্ভর করছে। কৃষকেরা গোবর দিয়ে সার তৈরি করে জমিতে ব্যবহার করে উর্বরতা বৃদ্ধি করতে পারবে।