ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তারের জন্য বহুতল ভবন রাতভর অভিযান ও তল্লাশি চালিয়েও খোঁজ পাইনি যৌথ বাহিনী। এ নিয়ে ছাত্র-জনতার মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্র-জনতা খবর পায় যে, মোস্তাক আহমেদ বাবু কাদিরগঞ্জ নগরভবন এলাকার একটি বহুতল ভবনে নিজের ফ্ল্যাটে উঠেছেন। এরপর ভবনটি ঘেরাও করে পুলিশ, ডিবি পুলিশ, সিআরটি, সেনাবাহিনী এবং র্যাব। তল্লাশির পরও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভোর রাত পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভবনটি ঘিরে রেখেছিল।
ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় তার নাম ছিল, সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তাকে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে দেখা গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘ অভিযানেও তাকে পাওয়া যায়নি। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। মোস্তাক আহমেদ বাবু রাজশাহীতে সাব্বির আয়রন স্টোর নামে একটি ব্যাটারির দোকান দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। এ কারণেই সে ‘ব্যাটারি বাবু’ বলে পরিচিত হয়ে গেছে।
ব্যাটারি বাবু ২০০৩ সালে ক্রিকেটার জিকো হত্যার মামলার আসামিও ছিলেন। ওই মামলার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়ে যান এবং ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটুর ছত্রছায়ায় রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী মহানগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান।
বৃহস্পতিবার রাতে ভবনের সামনে এক নারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আমরা তাকে ঢুকতে দেখেছি। তারপর কীভাবে তিনি হাওয়া হয়ে গেলেন, তা বুঝতে পারছি না।
অন্য একজন ছাত্র জানান, ফ্ল্যাটের সামনে গেলে তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন তাকে গ্রেপ্তার না করানোর জন্য, কিন্তু তারা টাকা না নিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, রাত ৩টা পর্যন্ত অভিযান চলেছে, কিন্তু আসামিকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
আপনার মতামত লিখুন :