ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

কচুর লতিতে কৃষকের ভাগ্য বদল

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জেলার বরুড়া উপজেলার কচু ও কচুর লতি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হচ্ছে। পাশাপাশি চাহিদা থাকায় কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ প্রায় ২৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে এই কচু ও কচুর লতি। উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে পুষ্টিকর এ সবজি। 

অন্য ফসলের তুলনায় কম শ্রম ও বেশি লাভ হওয়ায় এই সবজি  চাষে বিনিয়োগ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, এ এলাকা থেকে বছরে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার কচু ও লতি রপ্তানি হয়। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন কচুর লতি চাষে।

বরুড়া উপজেলার আগানগর, ভবানীপুর ও খোশবাস দক্ষিণ- এই তিন ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামে কচু ও লতির চাষ হয়। বাকি ১২টি ইউনিয়নে বিচ্ছিন্নভাবে চাষ হচ্ছে।

আগানগর গ্রামের কৃষক হারুন মিয়া বলেন, ‘কচু চাষে খরচ কম, কিন্তু লাভ বেশি হয়। তাই এই অঞ্চলে যত পরিবার আছে সবাই ধানসহ নানা সবজি বাদ দিয়ে কচু চাষ করছে। এ কচু চাষই আমাদের এ অঞ্চলের জীবিকার প্রধান মাধ্যম।’

তিনি বলেন, ‘জন্মের পর থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে এ কচু চাষের সঙ্গে জড়িত আছি। সপ্তাহে দুদিন জমি থেকে কচু উঠানো হয়। প্রতি কেজি লতির দাম ৪০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। ৪৫ শতাংশ জমিতে কচু চাষ করতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। এবছর এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকার বেশি লতি বিক্রি করা হয়েছে।’

এ জন্য আমরা ধান বা অন্যান্য সবজি চাষ বাদ দিয়ে জমিতে শুধু কচুর লতি চাষ করি। লতি চাষ করে আমরা নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছি পাশাপাশি বিদেশে এই লতি রপ্তানি করার ফলে দেশের লাভ হচ্ছে।

কৃষক মোস্তফা বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে এবং সারের দাম যদি কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে হয় তাহলে আরো বেশি লাভবান হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, জেলায় এবার প্রায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে লতি চাষ হয়েছে। কুমিল্লায় কচু ও কচুর লতিতে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। কারণ কচু ও কচুর লতির কোনো অংশই ফেলনা নয়। এ সবজি চাষে রোগবালাই খুবই কম হয়। কাজেই ফলন বেশি হয়। এ বিষয়ে কৃষকদের উন্নত চাষের জন্য কৃষি অফিস পরামর্শসহ নানা সহযোগিতা করে আসছে।