মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশুকে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগের তিনদিন পর মাগুরা সদর থানায় চারজনের নামে মামলা করেছেন শিশুটির মা আয়েশা আক্তার।
এ বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, মামলার চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলো- শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮), বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের ভাই রাতুল শেখ (১৭) ও তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। এতে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিলো। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগীর মা আয়েশা আক্তার বলেন, আমার মেয়ের এখনও জ্ঞান ফেরে নাই। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে মেয়ে একাই ছিলো। এ কারণে কে তাকে ধর্ষণ করেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারছেন না কেউ। তবে এ ঘটনায় তিনি চারজনের নামে মামলা করেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারও করেছে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
তিনি বলেন, মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত উদ্ধার করে প্রখমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে শিশুটির চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। চিকিৎসার জন্য পেডিয়াট্রিক, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, অ্যানেসথেসিয়া ও গাইনি ডিপার্টমেন্ট মিলে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
শনিবার (৮ মার্চ)দুপুরে শিশুটির শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শিশুটির অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। তার গলার আঘাত খুবই মারাত্মক। গতকাল রাত ৯টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’
এদিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির এখরো জ্ঞান ফেরেনি। দুইদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসার উপরেই রাখা হয়েছে তাকে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে শিশুটি অচেতন অবস্থায় রয়েছে। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৪৭) ও স্বামী সজিব শেখকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ।