ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের `পেশ ইমাম` নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে ডিসি ও ইউএনওসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে গোলাম মোস্তফা নামে এক চাকরিপ্রার্থী। গত ৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে তিনি মামলাটি করেন।
মামলায় উক্ত নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরিন কে ১নং আসামী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদারুল আলম কে ২ নং আসামী করা হয়েছে।
এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক এবং নিয়োগ পাওয়া ইমাম মো. যোবায়ের আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে। ইমাম পদে নিয়োগ ছাড়াও খাদেম পদে নিয়োগেও অনিয়ম করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এছাড়া মুয়াজ্জিন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীর ভাইকে।
মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা বলেন, “আমি কোরআনের হাফেজ। প্রায় ১৭ বছর ধরে ঢাকায় খতমে তারাবি পড়াচ্ছি। আমি গতবছর আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও একই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলাম কিন্তু আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এবারও লিখিত পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি। ভাইভায় আমাকে শূন্য নম্বার দিয়েছে।”নিয়োগ পাওয়া যুবায়ের আহমেদ উপজেলা মডেল কমপ্লেক্স মসজিদের ইমাম মোখলেছুর রহমানের আত্মীয়। লোক মুখে শুনেছি এখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাসিরনগর উপজেলা সুপারভাইজার মাহমুদুন্নবী বলেন, ‘পরীক্ষা শতভাগ ফেয়ার হয়েছে। ভাইভা বোর্ডে উপজেলা প্রশাসনসহ মোট ৮ জন বিচারক ছিলেন। একটি কিতাবের আয়াত পড়তে গোলাম মোস্তফাকে দেওয়া হলে বার বার আয়াতে ভুল বলছিলেন। দুইজন বিচারক অভিযোগকারী গোলাম মুস্তফাকে মোট ১.১ নম্বর, বাকি ৬ জন বিচারক তাকে কোনো নাম্বার দেয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, ‘বিষয়টা নিয়ে বলার তো কিছু নাই। মামলা যেহেতু হইছে ঐটা আদালতেই বলি।’
নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরিন এ বিষয়ে বলেন, ‘আসলে অনিয়মের কিছু নাই। প্রশ্নে একটু ঝামেলা হয়েছে। ভাইভাতে কোনো অনিয়ম হয় নাই। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগের তদন্ত চলছে।’
ইমাম পদে নিয়োগ ও ১ম স্থান হওয়া মামলার ৪ নং আসামি মো. যুবায়ের আহমেদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, নিয়োগ পরীক্ষায় ৮০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ফলাফল সীটে অভিযোগকারী গোলাম মুস্তাফা ৫১ নাম্বার পেলেও ভাইভাতে ২ বিচারকের দেওয়া ১.১ নাম্বার ফলাফল সীটে উল্লেখ করা হয়নি এবং শেখ ছাইদুল হক ৫১ নম্বর এবং তোফায়েল আহমেদ পায় ৫০ নম্বর। কিন্তু লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় যথাক্রমে ৩৩.৫-১৭.৬ পাওয়া যুবায়ের আহমেদ কে পেশ ইমাম পদে নিয়োগের সুপারিশ করে ভাইভা বোর্ড।