ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে গিয়ে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনে ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শনিবার (৮ মার্চ) জেলা সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ি মাদারগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ভূক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিক স্কুলের বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়াতো।প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে প্রাইভেট পড়তে যায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। তাকে একাকী পেয়ে ওই শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় পাষণ্ড শিক্ষক।
শিশুটির চিৎকার চেচামেচিতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসার আগেই ওই শিক্ষকের লোকজন ধর্ষিত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে জেলা শহরের সেবা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসে। গোপনে চিকিৎসা দেয়ার চেস্টা করার কথা জানতে পেরে সাংবাদকর্মীরা ছুটে গেলে দ্রুত সময়ে শিশুটিকে জেনারেল হাসপাতালে হস্তান্তর করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
এ সময় সংবাদকর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয় ওই প্রতিষ্ঠানের সবুজ নামে এক যুবক সহ ধর্ষকের লোকজন। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেস্টা করলে জেলার অন্যান্য গণমাধ্যকর্মীদের উপস্থিতিতে তারা পালিয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে অনৈতিক কাজের চিকিৎসা দিয়ে মোটা অংঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয় জড়িতরা। এরই মধ্যে ভুক্তভোগীর স্বজনরা এসে মেয়েটিকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, সমাজের এমন মানুষরুপী জানোয়ারদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ইতোমধ্যে অপরাধীকে বাঁচাতে নানা রকম পায়তারা চালাচ্ছে। প্রভাবশালী রাজনীতিক নেতারা ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে ওই ভুক্তভোগী শিশুকে সরকারি হাসপাতালে না পাঠিয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে আসে। অভিযুক্ত শিক্ষককে দ্রুত আটক করার দাবি করেন তারা।
পরবর্তিতে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা দ্রুত ছুটে যান হাসপাতালে। ঘটনা পর্যলোচনা করে ভুক্তভোগীকে সহায়তার পাশপাশি দোষি ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) রকিবুল আলম চয়ন জানান, ধর্ষণের অভিযোগে একটি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি এবং এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে। এই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
আর অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরেফা খাতুন বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ আছে। আমরা কাউকে কোচিং করার অনুমতি দেইনি। আমি ওই শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার মুঠোফোন বন্ধ। আমি বিস্তারিত জেনে আমার শিক্ষা অফিসার কে অবগত করবো।
এ বিষয়ে ভুল্লি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিককে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :