ঢাকা রবিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৫

মাদারীপুরে মসজিদে ঢুকেও রক্ষা পেল না ৩ ভাই

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২৫, ০৮:৫৮ পিএম
ছবিঃ সংগৃহিত

মাদারীপুর সদরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাইসহ মোট তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।

শনিবার (৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- একই এলাকার আজিবর সরদারের ছেলে সাইফুল সরদার (৪০) ও আতাউর সরদার (৩৫) এবং তাদের চাচাতো ভাই মুজাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (১৭)।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। অন্যপক্ষ একই এলাকার হোসেন সরদারও এই কাজের সাথে যুক্ত।

বালু উত্তোলন নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। একে অপরকে বালু উত্তোলন করতে বাধা দিচ্ছিল। এরই জেরে শনিবার (৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে খোয়াজপুর সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সামনে একা পেয়ে সাইফুল সরদারের ওপর হামলা চালায় হোসেন সরদারের লোকজন। এ সময় এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাইফুলের বড় ভাই ও তার পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। হাতাহাতির একপর্যায়ে প্রাণ রক্ষা করতে তিন ভাই দৌড়ে মসজিদের মধ্যে লুকিয়ে পড়েন। পরে সেখান থেকে তাদের টেনেহিঁচড়ে কোপাতে কোপাতে বাইরে বের করা হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই আপন দুই ভাই সাইফুল সরদার ও আতাউর সরদার মারা যান। চাচাতো ভাই পলাশ সরদারকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ।

এ ঘটনায় নিহতদের ভাই অলিল সরদার (২৮) ও আজিজুল হকের ছেলে তাজেল সরদার (২৫) গুরুতর আহত হন। তাদের প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে আরও আহতরা হলেন— নিহত সাইফুল সরদারের স্ত্রী সতি বেগম (২৫), নিহত আতাউর সরদারের স্ত্রী মাহমুদা বেগম (৩০), রোজিনা বেগম (৩৫) প্রমুখ। আহতরা মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিষয়টি খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

নিহতদের মা সুফিয়া বেগম বলেন, ‘হোসেন সরদার ও শাজাহান খাঁনের লোকজন আমার দুই ছেলেকে হত্যা করেছে। আরেক ছেলের অবস্থাও গুরুতর। এই হত্যার বিচার চাই।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, ‘এ ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। পলাশ সরদার নামে আরও একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীনে মারা গেছেন। পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে অভিযান চলমান।’