মেয়ে নিখোঁজ, থানায় বাবাকে অপমান করলেন ওসি

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৫, ১০:০৯ এএম

মেয়ে নিখোঁজ, থানায় বাবাকে অপমান করলেন ওসি

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার কয়রায় শ্বশুর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন আয়শা আক্তার মীম (২১) নামে এক গৃহবধু। জানতে পেরে নিখোঁজ মেয়ের সন্ধানের জন্য পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইতে গিয়ে অপমানিত হয়েছেন ওই নারীর বাবা মোখলেসুর রহমান। তিনি উপজেলার ২ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দা।  

এ ঘটনায় শনিবার ভুক্তভোগী কয়রা থানার ওসি এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ৫ মার্চ রাত থেকে তার মেয়ে (২১) শ্বশুর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানাতে তিনি ও তার ভাই ইউনুস আলী শুক্রবার সকালে কয়রা থানার ওসি এমদাদুল হকের কাছে যান। 

ঘটনা শুনে ওসি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলেন, ‘আপনার মেয়ে কার সঙ্গে পিরিতি করে চলে গেছে সেই মোবাইল নাম্বার দেন। তার সঙ্গে কথা বলে ফিরিয়ে আনতে পারি কীনা দেখি।

এ সময় ওসির কাছে অনুনয়-বিনয় করে লিখিত অভিযোগটি নেওয়ার জন্য বলা হলে-তিনি আল্লাহররস্তে ডিউটি অফিসারের কাছে রেখে চলে যেতে বলেন এবং সময় পেলে দেখবেন বলে জানান।  

ঘটনার সময় ওসির কক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কয়রা উপজেলা কমান্ডের আহ্বায়ক মওলা বকস। তিনি বলেন, একজন পিতা তার নিখোঁজ মেয়ের সন্ধানের জন্য পুলিশের সহযোগীতা চাইতে পারেন। এটা তার নাগরিক অধিকার। কিন্তু পুলিশ তাকে যেভাবে বলেছে তা অপমানজনক।

নিখোঁজ গৃহবধুর বাবা মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘আমার মেয়ে শশুর বাড়িতে প্রায়ই নিগৃহীত হয়ে আসছে। সে কারণে অভিমানে কোথাও চলে গেছে হয়তো। মেয়ের সন্ধানের জন্য ওসি স্যারের কাছে সহযোগীতা চাইতে গেলে উল্টো তিনি অপমানজনক কথা বলেছেন। এ সময় আমার সাথে থাকা আমার ফুফাতো ভাই ওসি স্যারের কথার প্রতিবাদ করলে তাকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।’ তিনি এ ঘটনার প্রতিকার দাবী করেন।

‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারি সংস্থা’ কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি ও আইনজীবি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, রাষ্ট্রের সেবা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানে সহযোগীতা চাইতে গিয়ে কোন নাগরিক হেনস্থার শিকার হলে তা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে কয়রা থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, নিখোঁজ নারীর বাবার সঙ্গে আরেক ব্যক্তি থানায় এসেছিলেন। তিনি অপ্রাসাঙ্গিক কথা-বার্তা বলছিলেন, এ জন্য তাকে সতর্ক করে কিছু কথা বলা হয়েছে। ওই নারীর বাবার সঙ্গে খারাপ আচারণ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার টিএম মোশারফ হোসেন বলেন, সেবা গ্রহীতার সাথে কোন ধরনের খারাপ ব্যবহার করার সুযোগ নেই। আগে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে হবে। এটা পুলিশের দায়িত্ব।

আরবি/জেডআর

Link copied!