কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া দিয়ে ‘জুলাই আহতদের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা শেখ মো. রাসেল। এ ঘটনায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এবং তার নাম তালিকা থেকে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, শেখ মো. রাসেল নোয়াখালীর কুতুবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমন করতে সারা দেশের মতো নোয়াখালীতেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
শেখ মো. রাসেল নিজেও এসব হামলায় সরাসরি অংশ নেন এবং আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা চালানোর নেতৃত্ব দেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি, হামলাকারী হয়েও কিভাবে তিনি ‘আহত’ হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেন, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান একাধিক শিক্ষার্থী।
গত ৪ মার্চ প্রকাশিত ‘জুলাই আহতদের’ গেজেটে শেখ মো. রাসেলের নাম দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, যারা সত্যিকারের আহত হয়েছেন, তাদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের হামলাকারীদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা দ্রুত তদন্ত করে তার নাম বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি জানান, ‘আমরা প্রত্যেকটি তালিকা প্রস্তুতের সময় ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছি, যাতে তালিকায় নির্ভুলভাবে সংশ্লিষ্টদের নাম অন্তর্ভুক্ত থাকে।
এই তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় ছাত্র প্রতিনিধিরা সরাসরি ভেরিফিকেশন করেছেন, যাতে যথাযথভাবে সঠিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। তবে সংশ্লিষ্ট কোনো শিক্ষার্থী বা প্রতিনিধি যদি কোনো ভুল চিহ্নিত করে আমরা তা খতিয়ে দেখব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এই বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা সমন্বয়ক ফরহাদুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করেছি এবং তালিকা তৈরির প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। তবে এরপরও কিছু ত্রুটি আমরা লক্ষ করেছি, যা দ্রুত সংশোধনের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। প্রশাসন আমাদের পর্যবেক্ষণগুলো গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’