ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

লাকসামে সড়ক দখল, যানজটে ভোগান্তি

মোজাম্মেল হক আলম, লাকসাম
প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৫, ১২:৪৭ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কুমিল্লার লাকসাম পৌরশহর বছরের পর বছর ফুটপাত দখলে রেখেছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। এতে পৌর শহরের প্রধান সড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পৌরসভার প্রায় সবগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখল করে চলছে ভ্রাম্যমান দোকানিদের বেচাকেনার কাজও।

এসব ভ্রাম্যমান দোকানীদের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী ও ক্রেতা সাধারণ। সড়কে হাট-বাজার বসার পাশাপাশি ব্যাটারি চালিত অনুমোদিনহীন অটোরিকশার যন্ত্রণাতো লেগেই আছে। মাঝে মধ্যে ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনাও।

রমজান যত যাচ্ছে এই শহরে ক্রেতার সমাগম ততই বাড়ছে। যান চলাচলের রাস্তা দখল করে ফুটপাতে ভ্রাম্যমান দোকানির দোকানদারী ও অবৈধ ব্যাটারী চালিত অটোরিকশার পাকিংয়ে তীব্র যানজট দেখা দেয় প্রতিদিন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনের বেলায় বাজারে মালবাহী যানবাহন লোড-আনলোডও চলে প্রতিনিয়ত। যার কারনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

পৌরশহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র দৌলতগঞ্জ বাজারে প্রতিদিন ফুটপাত ও সড়ক দখলকারীদের পাশাপাশি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, পিকআপ, ইজিবাইক ও ভটভটি থেকে মালামাল লোড-আনলোড করায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সময়মতো গন্তব্যে পৌছাতে পারেনা অনেক মানুষ।

স্থানীয় প্রসাশন দিনের বেলায় বাজারে মালবাহী যানবাহন লোড-আনলোড নিষিদ্ধ করলেও এসবের তোয়াক্কা করছেনা এখানকার ব্যবসায়িরা। তার ওপর রয়েছে ভ্রাম্যমান দোকানিদের ফুটপাত দখলের প্রতিযোগিতা।

লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারটি এখানকার বৃহত্তর বাণিজ্যিক কেন্দ্র হলেও নেই কোন গাড়ি পার্কিং ও রিক্সা ষ্ট্যান্ডের ব্যবস্থা। রাস্তার উপর যত্রতত্র ভাবে রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন দাড়িঁয়ে থাকার ফলে যানজট আরো তীব্র আকার ধারন করে।

এছাড়াও সড়কগুলোতে ইজি বাইকের দৌরাত্ম জনজীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। ফলে যানজটে নাকাল সাধারন মানুষ। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত শহরের পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড, সামনির পুল, কলেজ রোড, ব্যাংক রোড, ধানবাজার, সদর রোড, রাজঘাট, চাঁদপুর রেলগেইট, নোয়াখালী রেলগইট, চাউল বাজার, দৈনিক তরকারী বাজার, গরু বাজার, বাইপাস চৌরাস্তা, চৌদ্দগ্রাম রোডে তীব্র যানজটের কারনে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, অফিসগামী লোকজন, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ওই যানজটে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে অনেককে।

লাকসাম বাজারে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং নাগরিকদের পরিপূর্ণ সেবা প্রদান করতে কর্তৃপক্ষ চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না। একদিকে সড়কের উপর বাজার বসেছে, অন্যদিকে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষ। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। আমাদের দূর্ভোগ দেখার কেউ নেই। যারা হাটের ইজারা নিয়েছে তারাই সড়ক দখল করে বাজার বসাইছে। সেখান থেকে নিয়মিত টোল আদায়ও হচ্ছে। জনগণের দূর্ভোগে তাদের কিছু আসে-যায় না।

এ বিষয়ে লাকসাম বণিক সমিতির আহবায়ক আলহাজ মজির আহমেদ বলেন, বাজার ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দৌলতগঞ্জ বাজারে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। রমজানে বাজার যানজটমুক্ত করতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছোটবড় মালবাহী সকল যানবাহন লোড-আনলোড বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপশি লাকসাম পৌরসভার অধিনে যানজট নিরসনে পৌর কর্মীরা মোড়ে মোড়ে কাজ করছে।

লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লাকসাম পৌরসভার প্রশাসক কাউছার হামিদ বলেন, লাকসাম পৌরসভার সড়কগুলোতে অবৈধভাবে বসা হাট বাজারগুলো উচ্ছেদের জন্য বনিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ইজারাদারদের সাথে নিয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। ঈদ বাজারে যেন কোন যানজট সৃষ্টি না হয়
আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে আছি।