ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে (২০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বাকি দুই আসামি এখনো পলাতক রয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম রুপালী বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কোন্ডা ইউনিয়নের পানগাঁও এলাকার মাসুদ ফরাজীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম সিয়াম (২০) শম্ভুনাথ সরকারের ছেলে জিৎ সরকার (১৯)। এঘটনায় পলাতক দুইজন একই এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে মোঃ লিমন (১৮) ও সেলিম মিয়ার ছেলে মো. ইয়াসিন (১৮)।
শনিবার (৮ মার্চ) রাতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে পানগাঁও ঋষিপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে ওই নারীকে পালাক্রমে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
বর্তমানে শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি রয়েছে তিনি।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই নারী প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়াদ হোসেন নামের এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে।
বর্তমানে ওই নারী প্রায় সাড়ে চার মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। এ অবস্থায় ১৫ দিন আগে তার স্বামী রিয়াদ ভাড়া বাসায় তাকে একা রেখে অন্যত্র চলে যায়।
একপর্যায়ে তার স্বামী রিয়াদ তার মুঠোফোন বন্ধ করে ওই নারীর সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন, স্বামীর কোন খোঁজ না পেয়ে ওই নারী তার বাবার বাড়ি চাঁদপুরে ফিরে যান। মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানান।
একপর্যায়ে মায়ের সাথে অভিমান করে তিনি গত শুক্রবার সকালে চাঁদপুর থেকে লঞ্চযোগে ঢাকায় ফিরে আসেন এবং রাজধানীর একটি মাজারে রাতযাপন করেন।
শনিবার সকালে বুড়িগঙ্গা (পোস্তাগোলা) সেতু পার হয়ে হাসনাবাদ সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকায় এসে ঘোরাফেরা করতে থাকে ওই নারী, সেসময় সে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত ছিলো।
রাত আটটার দিকে ওই এলাকার সিয়াম ও জিৎ তাকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কর দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে লিমন ও ইয়াসিন নামে আরও দুজনকে তারা ডেকে নিয়ে আসে, একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টা থেকে রাত একটা পর্যন্ত আশরাফুল ইসলাম, জিৎ ও লিমন ওই নারীকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
সে সময় অভিযুক্তরা জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে ওই নারীর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আশরাফুল ও জিৎকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। তবে লিমন ও ইয়াসিন ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন সিয়াম ও জিৎকে আটক করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই দুজনকে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুইজন আসামির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। পলাতক দুইজনের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :