ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভেঙ্গে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ফেসবুক ও ইউটিউবে নুরুজ্জামান কাফির তৈরি বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট দেখে প্রতিশোধ নিতে তার বাড়ি পুড়িয়ে দেয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দুই কর্মী। এ সময় তারা কাফির বাড়ি পোড়ানোর ভিডিও কনটেন্টও তৈরি করে।
রোববার (৯ মার্চ) রাতে বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ।
গ্রেপ্তার মো. শাহাদাত হাওলাদার (২২) বরগুনার আমতলী ইউনিয়নের সেকান্দাখালী এলাকার মো. নসা হাওলাদারের ছেলে এবং মো. মাহফুজ মোল্লা (২১) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব টিয়াখালী গ্রামের মো. হিরণ মোল্লার ছেলে। তারা বরিশালের একটি কলেজে অনার্স পড়ুয়া।
পুলিশ সুপার বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ করে মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীকে সনাক্ত করে। তাদের অবস্থান ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে পটুয়াখালী ও বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত শাহাদাত ও মাহফুজ বরিশাল থেকে রাত ৮ টার দিকে বাসযোগে বরগুনার আমতলি এলাকায় বান্দুরা স্ট্যান্ডে আসে। সেখান থেকে তাদের পরিচিত একটি দোকান থেকে ৫০০ টাকার ডিজেল কিনে ভাড়া করা একটি মোটরসাইকেলে কলাপাড়ার রজপাড়া এলাকায় গিয়ে কাফির বাড়ির আশেপাশে অবস্থান নেয়। পরে সুবিধামত সময়ে রাতে কাফিদের বসতঘর ও রান্না ঘরের দেয়ালে, চালে, কাঠে ও টিনের বিভিন্ন জায়গায় ডিজেল ছিটিয়ে দেয়। কেউ যাতে তাদের ধরতে না পারে এজন্য বাড়ির পেছনের দরজা দড়ি দিয়ে বেধে রাখে।
আসামি শাহাদাতের সাথে থাকা ম্যাচ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ও নিজেদের ব্যবহৃত মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওইদিন সকালেই বাসযোগে বরিশাল চলে যায়। পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোন ইন্ধনদাতা, সহায়তাকারী বা অর্থযোগানদাতা যেই জড়িত থাকুক তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির গ্রামের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই সময় ঘরে কাফির বাবা, মা, ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরের পিছনের দরজা ভেঙ্গে বের হন। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরদিন কাফি বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :