ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

স্ত্রীকে খুশি করতে হাসিনার মাথা কাটেন আশরাফুল

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম

প্রথম স্ত্রীকে খুশি করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন পাষন্ড স্বামী। বেড়ানোর কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে নিজ ভ্যান যোগে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। পথিমধ্যে পানের সঙ্গে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। 

তারপর ঠান্ডা মাথায় দেহ থেকে মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করেন। পরে বিচ্ছিন্ন মাথা দূর্গাপুর এলাকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি তামাক খেতে পুঁতে রাখেন স্বামী আশরাফুল ইসলাম (৫০)।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, গত ৫মার্চ দুপুরে সদর উপজেলার ফুলগাছ গ্রামের একটি ভুট্টাখেত থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাতের আঙুলের ছাপ থেকে রংপুরের সিআইডি পুলিশ নিশ্চিত করে, মরদেহটি জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর দীঘলটারী গ্রামের আশরাফুলের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগমের (৩৮)। ঘটনার পর থেকে নিহত হাসিনার স্বামী আশরাফুল ও তার প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসা (৪৫) পলাতক ছিল।

গত শুক্রবার বিকেলে সদর থানা পুলিশ প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসাকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়। পরে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সতিন হাসিনা বেগমের বিচ্ছিন্ন মাথা পুঁতে রাখার তথ্য দেন তিনি। তথ্যমতে আদিতমারীর দূর্গাপুর এলাকায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি তামাক খেতে পুঁতে রাখা হাসিনার বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

স্বামী আশরাফুল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক। সে আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর দীঘলটারী গ্রামের বাসিন্দা ও সদর উপজেলার চর কুঠীরপার গ্রামের নবাব আলীর ছেলে। নিহত হাসিনা বেগম আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং আদিতমারী উপজেলার দীঘলটারী গ্রামের কাশেম আলীর মেয়ে।

রোববার বিকেলে থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল শহরের খুটামারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে পুলিশ সুপার জানান।

উল্লেখ্য, স্বামী আশরাফুল ইসলাম নিহত হাসিনার সঙ্গে বিয়ের পর একটি মেয়েসহ বিচ্ছেদ হয়। পরে দিঘলটারী গ্রামের নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাথে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয়। সেখানেও একটি মেয়ে হলে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার ছেড়ে পুনরায় আশরাফুলের কাছে ফিরে আসেন। পরে আবারও হাসিনার একটি মেয়ে সন্তান হয়। বার বার মেয়ে সন্তান জন্ম, অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো হাসিনার সংসারে।