ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে ফেরত পেল না

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করেছে একটি চক্র। তবে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে ফিরে পায়নি ভুক্তভোগী কৃষক পরিবার। অপহৃত ২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র।

রোববার (৯ মার্চ) রাতে মুক্তিপণের টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেয় অপহৃত মিলনের পিতা পানজাব আলী। পানজাব আলী ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকায়।

জানা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে ৮ টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইন্সষ্টিটিউটের পিছনে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘন্টার মধ্যেই মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় তারা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। এরপর চক্রটি ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন আবারও এ দাবি বেড়ে ১০ লাখ টাকা হয়। তিনদিন পরে ১৫ লাখ টাকা চায় চক্রটি। সর্বশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।

মিলনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, অপহরণকারীরা যখন যতো টাকাই চেয়েছে তারা তা দিতে রাজি হয়। তবে বিভিন্ন সময় টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে মুক্তিপণ বিনিময়ে ঘটনাটি দীর্ঘ করেছে অপহরণকারীরা। সর্বশেষ রোববার রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী রাত ১০টার ট্রেন উঠতে বলে অপহরণকারীরা চক্রটি। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া নামক স্থানে চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে তারা।

পরিবার জানান, মিলনের জন্যে দুই সেট গায়ের পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেয়ার ১০ মিনিট পরে টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্র। এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় চক্রটি। স্টেশনে গিয়ে সম্পূর্ণ স্টেশন তন্ন তন্ন করে খোঁজাখুঁজি করা হয়। রাতের ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ছেলে মিলনের দেখা পায়নি পরিবারটি।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি শহীদুর রহমান জানান, অপহরণের ঘটনাটি ঘটার পরদিন মৌখিকভাবে পুলিশকে জানায় মিলনের পরিবার। তখন থেকেই চক্রটিকে ধরার জন্যে কাজ করছিলো পুলিশ। তবে তদন্ত কাজে মিলনের পরিবারের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা পায়নি পুলিশ। সর্বশেষ ৫ মার্চ ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করে মিলনের পিতা। এরপর থেকে পুলিশের সাথে পানজাব আলী আর কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখেনি। সেই সাথে সাথে ২৫ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টি তারা পুলিশের কাছে গোপন রাখে তারা।