ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫

কাপ্তাইয়ে প্রসবকালে বন্য হাতি ও শাবকের মৃত্যু

রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
ফাইল ছবি

রাঙামাটিতে শাবক প্রসবের সময় একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে মারা গেছে শাবকটিও। গতকাল মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের কাইতংপাড়া এলাকা থেকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে বন বিভাগ।

গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুচিমং মারমা বলেন,সকালে বনের মধ্যে মৃত অবস্থায় মা হাতি ও শাবকটিকে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। বিষয়টি বন বিভাগকে জানানো হয়। পরে বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতি ও হাতিশাবকটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। কাপ্তাই পাল্পউড বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, প্রসবকালে শাবকটির দেহের অর্ধেক আটকে যায়। এ সময় মা হাতি ও শাবকের মৃত্যু হয়েছে। বন বিভাগ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

গর্ভবতী বন্য হাতির মৃত্যু সংক্রান্ত বন বিভাগের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়,১১ মার্চ আনুমানিক সকাল ১০ ঘটিকায় এলাকাবাসীর মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া যায় যে গাইন্দা ইউনিয়নের গভীরে কাইথাকপাড়ার যুগেজ পাহাড়ে একটি হাতি মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজভিলা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার ফিরোজ আল আমিন স্যার ও তার স্টাফরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। রাজস্থলী ভেটেরিনারীর সার্জেন্ট প্রতিনিধি চিরঞ্জিত চাকমা ও ইআরটি টিম সঙ্গী হন। পরবর্তীতে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক স্যারের দিকনির্দেশনায় মৃত হাতির নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ- মৃত হাতিটির চারপাশে অন্যান্য হাতির চলাচলের চিহ্ন দেখা গেছে,যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি একটি হাতির পালের অংশ ছিল। স্থানীয়দের মতে, ৯টি হাতির একটি পাল এ এলাকায় বিচরণ করছিল, যার মধ্যে থেকে একটি হাতি মারা গেছে। মৃত হাতিটি মহিলা হাতি এবং এটি গর্ভবতী ছিল। হাতিটির বয়স আনুমানিক ১৮ থেকে ২০ বছর। হাতিটির শারীরিক পরিমাপ দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৪ ইঞ্চি, মাথা থেকে শরীর ৭ ফুট,সামনের পা লম্বায় ৪ ফুট,বেড় ৩৬ ইঞ্চি, পেছনের পা লম্বায় ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি, বেড় ২৬ ইঞ্চি,লেজ লম্বায় ৪২ ইঞ্চি,বেড় ৭ইঞ্চি, পেটের মাপ ১৪ ফুট। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পুচিংমং মারমা,চেয়ারম্যান,গাইন্দা ইউনিয়ন, হ্লামংচিং,মেম্বার,৬নং ওয়ার্ড,গাইন্দা ইউনিয়ন,রাজভিলা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার ফিরোজ আল আমিন ও তার টিম এবং রাজস্থলী ভেটেরিনারী সার্জেন্ট প্রতিনিধি চিরঞ্জিত চাকমা ও ইআরটি টিম।

গৃহীত পদক্ষেপ হলো মৃত হাতির স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজস্থলী থানার ওসিকে অবহিত করা হয়েছে। একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) প্রস্তুত করা হচ্ছে। হাতির মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে নির্ণয়ের জন্য ময়নাতদন্ত ও অন্যান্য পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গর্ভবতী হাতিটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পরিবেশগত ভারসাম্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বন বিভাগ,প্রাণীসম্পদ বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।