প্রথমবারের মত দেশের আলেম-উলামাদের অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর কমিটি গঠিত হয়েছে। তবে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই সংগঠনটির জেলা ও মহানগর কমিটি অনেকটা নিরবে এবং নিভৃত্তে ঘরোয়া পরিবেশে আলোচনার মাধ্যমে করা হয়েছে। ফলে এই কাউন্সিল ইস্যুতে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে দৃশ্যমান কোন তৎপরতা ছিল না।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকাল ৩টায় নবগঠিত কমিটির ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামি মাদরাসা মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক কাউন্সিলের মাধ্যমে এই কমিটি ঘোষনা করেন কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
এ সময় সাদামাটা এই কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী বশিরউল্লাহ, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, কেন্দ্রীয় সহদফতর সম্পাদক মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম তোফাইল।
পরে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের আলোচনার মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর কমিটি ঘোষনা করা হয়। এতে নবগঠিত জেলা কমিটির নেতারা হলেন- সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ বিন হাফেজ্জী, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ।
অপরদিকে মুফতি মাহবুবুল্লাহ কাসেমীকে সভাপতি, মাওলানা মনজুরুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং মাওলানা রশিদ আহমদ ফেরদাউসকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ময়মনসিংহ মহানগর কমিটি ঘোষনা করা হয়।
কাউন্সিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব বলেন, আমরা ৩ জন করে নাম প্রস্তাব করেছি কিন্তু কমিটি হবে ১৫১ জনের। আশা করছি নতুন কমিটির দায়িত্বশীলরা জেলার ১৪টি থানা থেকে ২ থেকে ৩ জন প্রতিনিধি ডেকে ১৫১ সদস্যের বাকি পদগুলো সুবিন্যস্ত করবেন এবং ঈদের পর সাওয়ালের ১৫ তারিখের মধ্যে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে জেলা ও মহানগরের সবাইকে নিয়ে একটি পরিচিতি সভা করবেন, এইটা আমার প্রস্তাব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আলেম-উলামাদের অরাজনৈতিক সংগঠন ‘ইত্তেফাকুল উলামা মোমেনশাহী’ নামক সংগঠনটি হেফাজতে ইসলামের সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। ফলে হেফাজতে ইসলামের আলাদা নেতৃত্বে পৃথক কমিটি গঠন করা হলে এই দুইটি সংগঠনের মধ্যে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হতে পারে। বিধায় হেফাজতে ইসলামের এই কাউন্সিলটি অনেকটা নিরবে ও নিভৃত্তে ঘরোয়া পরিবেশে করা হয়েছে। তবে এনিয়ে কারো কোন দ্বিমত বা আপত্তি নেই বলেও জানান সূত্রটি।