পুলিশের উপর আক্রমণ করবেন না : আইজিপি

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০৫:০২ পিএম

পুলিশের উপর আক্রমণ করবেন না : আইজিপি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, আমাদের কাজ করতে দেন। অনুগ্রহ করে পুলিশের উপর আক্রমণ করবেন না। আমরা তো সমাজ এবং দেশেরই লোক। কিভাবে সমাজে স্থিরতা আসবে, কিভাবে আমরা নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচনের দিকে এগুবো, আমরা যদি আস্থা না আনতে পারি। আমাকে কেন কাজ করতে দিচ্ছেন না। এটা তো টোটালি যুক্তিহীন একটা কাজ। এতদিন পরে এখন তো আর আবেগতারিত হওয়ার কিছু নাই। পুলিশ তো মানুষের শত্রু  নয়। এই জায়গাটায় দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করি আমাদের কাজ করতে দেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকালে ১০টায় গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় শিল্প পুলিশ-২ এর ইউনিটের বিশেষ কল্যাণ সভায় উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ৫ই আগস্টের পরে আমাদের কি অবস্থা ছিল আপনারা জানেন। আমাদের কিছু কিছু সদস্য, মোস্টলি সিনিয়র অফিসার তাদের অতি উৎসাহ্, তাদের রাজনৈতিক আনুগত্য, সরকারী কর্মচারী আমার কিসের রাজনৈতিক আনুগত্য থাকবে? আমি কোন আওয়ামীলীগ বিএনপি কিছুই বুঝিনা। কিন্তু ওনাদের রাজনৈতিক আনুগত্যের জন্য পুরো পুলিশ কলংকিত হয়েছে। সারা বিশ্বে এখন বলে যে, বাংলাদেশ পুলিশ তারা এত নির্মম কিভাবে হলো?

বাহারুল আলম বলেন, আমরা যেটা করেছি আমিও তো এখন পুলিশ এবং ছিলাম। কাজেই এইটা যখন পুলিশ করে, তখন অবশ্যই এই দায়ভারটা আমার উপর এসে পরে। কারণ আমি সেই অপশনে থাকলেও দায়ভারটা আসে, আমার আত্মীয় স্বজনরা বলে, তোমরা এগুলা কি করছো। আমাদের যা করার কথা ছিল কিছুই আমরা করিনি বরং আমরা মানুষের বিরুদ্ধে গেছি এবং এটা কিছু সংখ্যক লোকের উচ্চভিলাষ, কিছু সংখ্যক লোকের অন্ধ এবং অন্যায় রাজনৈতিক আনুগত্যের জন্য এটা হয়েছে। এর জন্য আমাদেরকে জীবন দিতে হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে আমাদের যে লোকগুলো মারা গেছে তাদের ভুলের জন্য জীবন দিতে হয়েছে। এই দায়ভারটা যিনি জীবন দিয়েছেন তার তো নয়। এই দায়ভার যিনি অর্ডার করেছেন তার, তাকে অবশ্যই পানিশমেন্ট পেতে হবে। এটা আমি বিশ্বাস করি, যারা এ অন্যায় করেছেন তাদেরকে অবশ্যই পানিশমেন্ট পেতে হবে। এবং যিনি বাধ্য হয়ে এই কাজটা করেছেন আমার বিশ্বাস আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাবেন এবং অবশ্যই এপ্লিটেড হবেন এটা আমার বিশ্বাস। 

তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, ৫ই আগস্টের পরে আমাদের মধ্যে মানুষ আগে আমাদেরকে যেভাবে দেখেছে হঠাৎ করে তারা আমাদেরকে বন্ধু মনে করবে না। হঠাৎ করে আমাদের মনে করবে না, তারা ভিন্ন লোক। এজন্য আপনারা প্রতিদিন আপনাদের মূল্য দিচ্ছেন। এখনো পুলিশ জায়গায় জায়গায় যাচ্ছে, কাজ করতে যাচ্ছে আইন প্রয়োগ করতে যাচ্ছে সেখানে আক্রমনের শিকার হচ্ছে। আসামী ছিনিয়ে নিচ্ছে, ট্রাফিক পুলিশ ট্রাফিক এনফ্রোজ করতে চাচ্ছে। বলতেছে যে আপনি উল্টো দিক দিয়ে আসবেন না। আপনি আইন মেনে চলেন। সেখানে ট্রাফিক পুলিশের উপর চড়াও হচ্ছে। আইন না মানার একটা প্রবণতা চলে আসছে কেন, তারা মনে করছে যে, পুলিশ তারা জনগণেরই কাজ করেছে। এখন আমরা আমাদের মতো চলবো। পুলিশ লাগবে না। একটা সভ্য দেশ পুলিশ ছাড়া কিভাবে চলে? পৃথিবীর কোথায় আছে পুলিশ ছাড়া চলে?

পৃথিবীর কোথাও তো নাই। এই দেশের মানুষকে বুঝতে হবে যারা বুদ্ধিমান তারা অবশ্যই বুঝেন। কিন্তু এরকম যেরকম আমাদের মধ্যে ছিল এরকম অনেক অবুঝ এবং এরকম কিছু লোক আছে যারা মনে করে যে, যে পুলিশ এখন আইন প্রয়োগ করতে যাচ্ছে তারা তাদের প্রতিপক্ষ। দেশের অপরাধ দমন যদি করা না হয়, শৃঙ্খলা যদি না হয়, কোন নাগরিকটা থাকতে পারবে? এই ১৮ কোটি লোকের একটা লোকও কি ঘুমাতে পারবে? আপনারা তো খেয়াল করেছেন, যখনই অপরাধ ঘটে যায় তখন কি রকম শুরু হয়। তখন রাত জেগে নিজেদের পাহারা দিতে হয়। এই দায়িত্বটা তো আমার। এখন আমাকে যদি এই দেশের কিছু লোক ভুল বুঝে এবং দায়িত্ব প্রদান করতে না দেয় পুরো সোসাইটি সমস্যায় পড়বে।

আরবি/আবু

Link copied!