মাগুরার সেই শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিল জনতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম

মাগুরার সেই শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিল জনতা

ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আসিয়ার বোনের শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে জেলা শহরের নান্দুয়ালী চরপড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় নিহত শিশু আছিয়া খাতুনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে আছিয়ার আদি নিবাস শ্রীপুরের সোনাইকুণ্ডীতে তাকে দাফন করা হয়।

ধর্ষণের শিকার শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়ি নান্দুয়ালী চরপড়া এলাকায়। সেই বাড়িতে বেড়াতে গিয়েই শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। অভিযুক্ত আসামিরা হলো- শিশুটির বোনের স্বামী সজিব (১৮), ভাশুর রাতুল শেখ (২০), শ্বশুর হিটু শেখ ও শাশুড়ি জাহেদা বেগম।

এদিন দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিশ্চিত করে যে, ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি মারা গেছে। এ খবরে দেশজুড়ে বইছে শোকের হাওয়া। সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে নিথর দেহ নিয়ে মাগুরায় নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরছে শিশু আছিয়া।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে রওনা হয়। স্টেডিয়াম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তাকে নেওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। ঘোষণা অনুযায়ী রাতেই নোমানী ময়দানে সন্ধ্যা ৭টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার পর জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম শিশুটির লাশ কাঁধে করে বহন করেন।

এদিকে শিশু আছিয়ার বাকরুদ্ধ মা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। যেন থামছে না তার বিলাপের ডালি।

শিশু আছিয়ার মা বলেন, ‘আমার মণি যেভাবে মরছে, আমার মণি যেভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে মরছে, আমি তারও (অপরাধীর) ফাঁস দিয়ে বিচার চাই। (তার) এ রকম মৃত্যু চাই আমি, আমার মণির যেমন বেলেড দিয়ে কাটছে, গলায় ফাঁস দেসে, ঠিক সে রকম বিচার চাই আমি আপনাদের কাছে। ওরে যেন ওইরকম ফাঁসি দিয়ে মারে। ও রকম যেন ওরে বেলেড দিয়ে কাটে। আমার মেয়েটারে যে কষ্ট দিছে না? আমি তারেও এ রকম দেখতে চাই।’

সেদিনের সেই ঘটনার প্রসঙ্গে আছিয়ার মা বলেন, ‘ওর আপার বাড়িতে যাওয়ার পর, ওর আপাকে ধরে মেরেছিল। তখন আছিয়া বলেছিল, সে বাড়িতে গিয়ে সব বলে দেবে। এরপরই সেই রাতে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। বড় মাইয়াটারে ইচ্ছামতো মেরে আলাদা ঘরে থুইয়া দিছিল। পরে রাত ১১টার দিকে আমার কাছে ফোন দিয়ে বলসে আমার মণি অসুস্থ। আমি গিয়ে দেখি সদর হাসপাতালে ভর্তি করাইছে। তারে রাইখে পলাইছে ওই মহিলা।’

গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। পরদিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

গত শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে রোববার তাকে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়।

আরবি/এসএমএ

Link copied!